আজকাল ওয়েবডেস্ক: আগেকার দিনে আধুনিক ‘মেডিসিন’ ছিল না। মানুষের ভরসা ছিল আয়ুর্বেদ। ‘চরক সংহিতা’, ‘সুশ্রুত সংহিতা’ এবং ‘অষ্টাঙ্গ হৃদয়ম’-এর মতো আয়ুর্বেদের প্রধান গ্রন্থগুলিতে একটি বিশেষ ভেষজের বিশদ বর্ণনা ও গুণাগুণ উল্লেখ করা হয়েছে। এই ভেষজের সংস্কৃত নাম ‘শৃঙ্গবের’ অর্থাৎ যার অর্থ হরিণের শিং-এর মতো আকৃতি। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হাজার হাজার বছর ধরে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বর্তমানে আমরা একে চিনি আদা নামে। গুণের অন্ত নেই এই ভেষজের।
হজমশক্তি বৃদ্ধি করে: আদা পাচক রস নিঃসরণ বাড়ায় এবং খাদ্যনালীর পেশীগুলির সংকোচন-প্রসারণ নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে বদহজম, পেট ফাঁপা, গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা দূর হয়।
বমি বমি ভাব ও বমি কমায়: আদা মর্নিং সিকনেস (সকালের অসুস্থতা), গাড়িতে বমি হওয়া (মোশন সিকনেস) এবং অস্ত্রোপচারের পর বমিভাব কমাতে কার্যকরী।
সর্দি-কাশি ও ফ্লু উপশম করে: আদার অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাবলী রয়েছে। এটি গলা ব্যথা, সর্দি, কাশি এবং ফ্লু-এর উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। এর উষ্ণতা শরীরকে ভেতর থেকে গরম রাখে।
ব্যথা ও প্রদাহ কমায়: আদায় থাকা জিঞ্জেরল নামক উপাদান একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি আর্থ্রাইটিস, পেশীর ব্যথা এবং মাসিকের ব্যথা কমাতে সহায়ক।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আদা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর, যা শরীরের কোষগুলোকে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, আদা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে এবং ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে: আদা রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে, রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের (এলডিএল) মাত্রা কমাতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
আরও পড়ুন: রোগীদের উপুড় করে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে নিতেন! তারপর…? বিস্ফোরক অভিযোগ নামী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে
আরও পড়ুন: ‘স্তনদুগ্ধ আইসক্রিম’ খেতে হুড়োহুড়ি বড়দেরও! কত দাম? কোথায় পাওয়া যাবে এই স্বাদ?
ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে: গবেষণায় দেখা গেছে, আদার কিছু উপাদান ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি ব্যাহত করতে পারে, বিশেষ করে কোলোরেক্টাল (বৃহদান্ত্র ও মলদ্বার) ক্যানসার এবং ওভারিয়ান (ডিম্বাশয়) ক্যানসারের ক্ষেত্রে। তবে এ বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন।
আদার মধ্যে থাকা কিছু সক্রিয় উপাদান, যেমন জিঞ্জেরল ও শোগাওল, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এটি লিভারে কোলেস্টেরল সংশ্লেষণ কমাতে পারে এবং শরীর থেকে পিত্তরসের মাধ্যমে কোলেস্টেরল বার করতে সহায়তা করে। কিছু গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে আদা ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমাতেও সহায়ক।
ওজন কমাতে সাহায্য করে: আদা মেটাবলিজম বা হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং ক্ষুধা কমাতে পারে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
