ক্যানসার শুরু থেকেই জানান দেয় উপস্থিতি! অবহেলা করলেই বিপদ! কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণরোগ

ক্যানসার এমন এক রোগ, যা শরীরে বাসা বাঁধলে প্রাণ সংশয় হতে পারে। অনেক সময় প্রচুর চিকিৎসার পরেও এর কবল থেকে মুক্তি মেলে না। তাই এহেন মারণরোগের প্রকোপ থেকে বাঁচতে সর্বদাই সতর্ক থাকতে হবে। তবে ক্যানসারের লক্ষণগুলি শুরুতেই ধরতে পারলে এটি এড়ানো সহজ হয়ে যায়। বিস্তারিত জানাচ্ছেন অনকোলজিস্ট সুহেল কুরেশি।

চিকিৎসকের মতে, ক্যানসার নিঃসন্দেহে একটি গুরুতর রোগ। কিন্তু এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি সময়মতো শনাক্ত করা গেলে চিকিৎসায় সুরাহাও মিলতে পারে। যখন একজন রোগী মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন, তখন আরও ভালভাবে চিকিৎসা করা যায়।

ক্যানসার অনেক ধরনের এবং প্রত্যেকটিরই প্রাথমিক লক্ষণ ভিন্ন। তবে অনেক সময় মানুষ এই লক্ষণগুলি চিনতে অক্ষম হয়। স্তন ক্যান্সার সম্পর্কে বলতে গেলে, এর প্রাথমিক লক্ষণগুলি হল স্তনের মধ্যে মাংসপিণ্ডের উপস্থিতি অনুভব, স্তনবৃন্ত থেকে এক ধরনের তরল নির্গত হওয়া, স্তনবৃন্ত লালচে হওয়া। এই ক্যানসারের ক্ষেত্রে একটি স্তনের আকার অন্য স্তনের থেকে আলাদা হয়ে যায়। মহিলারা স্তন ক্যানসারের এই প্রাথমিক লক্ষণগুলি শনাক্ত করে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।

খাদ্যনালী ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্রথমে খাবার এতে আটকে যায়। খাবার এবং জল নীচে নামতে পারে না, গিলতে ব্যথা বা অসুবিধা অনুভূত হয়। একই সঙ্গে রক্ত বমি, ওজন হ্রাস, বমি, খিদের অভাব অনুভূত হওয়া- সবই পাকস্থলীর ক্যানসারের লক্ষণ। শরীরের যে কোনও অংশে মাংসপিণ্ডের অস্তিত্ব, ফোলাভাব, কোনও কারণ ছাড়াই ওজন হ্রাস ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।

আরও পড়ুন: সঙ্গীর যৌনমিলনে একেবারেই অরুচি? বিছানায় ঘনিষ্ঠ হতে চান না? নেপথ্যে থাকতে পারে বড় কারণ

চিকিৎসক জানান, কিছু ক্যান্সার খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যার দ্রুত চিকিৎসা করা প্রয়োজন। কিছু ক্যানসার আবার খুব ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে, যার চিকিৎসা খাওয়ার ট্যাবলেটের মাধ্যমেও করা যেতে পারে। এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে প্রথমে নিশ্চিত হওয়া উচিত যে এটি আদৌ ক্যানসার কিনা। এর জন্য পুরো শরীরের স্ক্যান করা প্রয়োজন। এটি রোগের মাত্রা এবং রোগটি কোথায় ছড়িয়েছে, তা প্রকাশ করে। এছাড়া একটি বায়োপসি পরীক্ষাও করা হয়, যা রোগীর ক্যানসার নিশ্চিত করে এবং রোগীর কী ধরণের ক্যান্সার আছে তা প্রকাশ করে।

কয়েকটি ক্যানসার আছে যেখানে বায়োপসি ছাড়াই শুধুমাত্র রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে শরীরে এই রোগ বাসা বেঁধেছে কি না তা জানা যায়। কিছু ক্যানসার বেশ আক্রমণাত্মক। এই ক্ষেত্রে এটির আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে। এই ক্ষেত্রে ঘনঘন চেকআপের জন্য হাসপাতালে যেতে হয়।

 এক্সপ্রেস কো ইউকে-তে প্রকাশিত এক আর্টিকেল অনুসারে, প্রায় ২০০ ধরনের ক্যানসার মানবদেহে প্রভাব ফেলে। এই রোগের লক্ষণগুলি শরীরের কোন অংশটি ক্যানসার আক্রান্ত, তার উপর নির্ভর করে। তবে কিছু লক্ষণ খুবই সাধারণ, যা সহজেই ধরা যেতে পারে। কিন্তু প্রায়ই মানুষ এটিকে অন্য কিছু ভেবে উপেক্ষা করে। ক্যানসার এড়াতে জীবনযাত্রার ধরন ঠিক রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানের মানুষের জীবনযাত্রার অবনতি হচ্ছে। শরীরচর্চা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের অভাব দেখা যায়। ধূমপান, মদ্যপান ত্যাগ করা উচিত। পান মশলা একেবারেই খাবেন না। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন, ব্যায়াম করুন।