স্ট্রবেরি একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর ফল। ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এর কদর প্রচুর। তবে পুষ্টিগুণের বাইরেও দাঁত ঝকঝকে করতে নাকি স্ট্রবেরির জুড়ি মেলা ভার। স্ট্রবেরি দিয়ে দাঁত ঘষলেই দাঁত সাদা হয়ে যায়, সমাজ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে এই টোটকা। কিন্তু সত্যি কি এটি উপকারী? আসুন জেনে নেওয়া যাক-
বিশেষজ্ঞদের মতে, স্ট্রবেরিতে রয়েছে ম্যালিক অ্যাসিড যা দাঁতের উপরিভাগের কিছু দাগ দূর করতে পারে, ফলে দাঁত কিছুটা সাদা দেখায়। তবে পরিবর্তনটি খুব কম এবং এটি আপনার দাঁতের প্রাকৃতিক রং বদল করে না। স্ট্রবেরির এই প্রভাব খুবই সাময়িক। খানিকক্ষণ পর দাঁত আগের মতোই হয়ে যায়।
স্ট্রবেরিতে থাকা ম্যালিক অ্যাসিড একটি হালকা প্রাকৃতিক অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি কফি, চা বা নির্দিষ্ট কিছু খাবারের কারণে হওয়া দাঁতের দাগ তুলতে পারে। যদি পানীয় থেকে দাঁতে হালকা দাগ পড়ে, তাহলে ম্যাশ করা স্ট্রবেরি লাগালে বা বেকিং সোডার সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে সামান্য পার্থক্য দেখতে পারেন। তবে এটি কেবল একটি অস্থায়ী সমাধান ।
এছাড়া স্ট্রবেরি খাওয়া উপকারী হলেও সরাসরি দাঁতে খুব বেশি লাগালে ক্ষতি হতে পারে। স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যাসিড ধীরে ধীরে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ের আশঙ্কা থাকে। এতে দাঁত সংবেদনশীল, হলদে হয়ে যেতে পারে, এমনকী ক্যাভিটি হওয়ার ঝুঁকিও বাড়ে।
কয়েকটি ঘরোয়া টোটকায় দাঁতের দাগ দূর করতে পারেনঃ
• বেকিং সোডা ও লেবুর রস: বেকিং সোডার হালকা ঘষে দাগ দূর হয়, আর লেবুর রসে থাকা অ্যাসিড দাঁতকে উজ্জ্বল করে। সপ্তাহে ১–২ বার ব্যবহার করলেই যথেষ্ট।
• হাইড্রোজেন পারক্সাইড: এটি দাঁতের হালকা ব্লিচ হিসেবে কাজ করে এবং দাগ পরিষ্কার করে। তবে সরাসরি ব্যবহার না করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে এবং বেশি ব্যবহার করা যাবে না।

• চারকোল: চারকোল দাঁতের উপর জমে থাকা দাগ ও ব্যাকটেরিয়া টেনে নেয়, ফলে দাঁত পরিষ্কার দেখায়। তবে নিয়মিত ব্যবহার দাঁতের ক্ষতি করতে পারে, তাই সতর্ক থাকতে হবে।
• তেল দিয়ে কুলকুচি: নারকেল, তিল বা সূর্যমুখীর তেল মুখে ১৫–২০ মিনিট কুলকুচি করলে মুখের ব্যাকটেরিয়া ও প্লাক কমে দাঁত পরিষ্কার হয়।
• লেবুর রস: লেবুর রস দাঁতের দাগ দূর করে কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহার করলে এমেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ব্যবহার শেষে অবশ্যই মুখ পানি দিয়ে ধুতে হবে।
এই সব উপায় উপকারী হলেও অতিরিক্ত ব্যবহার করা উচিত নয়। সপ্তাহে ১–২ বারই যথেষ্ট। না হলে দাঁতের সংবেদনশীলতা বাড়তে পারে। সেক্ষেত্রে নিয়মিত ব্রাশ করা, মাউথওয়াশ ব্যবহার এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার কম খাওয়া—এই অভ্যাসগুলো দাঁতকে দীর্ঘদিন সাদা রাখতে সাহায্য করে। একইসঙ্গে এই ঘরোয়া টোটকা শুধু দাঁতের উপরিভাগের দাগ দূর করে, ভেতরের দাগের জন্য তেমন কার্যকর নয়। তাই দাঁতের কোনও নির্দিষ্ট সমস্যা হলে অবশ্যই দন্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
