বিশ্বজুড়ে ক্রমশ বেড়ে চলেছে কোলেস্টেরল এবং ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা। কয়েক বছর আগেও বয়স ৪০-৫০-এর দোরগোড়ায় না গেলে কোলেস্টেরল, ব্লাড সুগারের মতো ক্রনিক অসুখ কড়া নাড়ত না। কিন্তু ইদানীং ত্রিশ ছুঁতে না ছুঁতেই হানা দেয় এই সব রোগ। নেপথ্যে ভুল খাদ্যাভাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা সহ আরও অনেক কারণ। তবে কারণ যাই হোক না কেন, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের মতো অসুখ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে অকালে ঘনিয়ে আসত পারে বিপদ। তাই প্রথম থেকেই সর্তক হওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস-কোলেস্টেরলের মতো রোগ বশে আনা কিন্তু খুব একটা কঠিন কাজ নয়। যার জন্য শুধু ওষুধ নয়, ডায়েটের উপর নজর দেওয়াও জরুরি। সেক্ষেত্রে নিয়মিত চারটি পাতা খেলে দারুণ উপকার পাবেন। 


তুলসী পাতা- তুলসী পাতায় থাকে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, আয়রন, দ্রবনীয় ও অদ্রবনীয় ফাইবার সহ একাধিক পুষ্টিগুণ।  তুলসী পাতার মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে, যা দেহে ক্ষতিকারক ফ্রি র‍্যাডিকেলের সঙ্গে লড়াই করে। আয়ুর্বেদে তুলসীকে "ওষুধের রাণী" বলা হয়। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৪-৫টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খাওয়া টাইপ ২ ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী। চাইলে তুলসী পাতা ফুটিয়ে খেতে পারেন। এর নিয়মিত সেবন রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং পেটের সমস্যাও দূর করে।

আরও পড়ুনঃ পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস? বিপদ এড়াতে কোন বয়স থেকে কোলেস্টেরল পরীক্ষা করানো জরুরি?

কারি পাতা- শুধু খাবারের স্বাদই বাড়ায় না, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অনেক সমস্যা থেকেও মুক্তি দিতে পারে কারি পাতা। সুগারের রোগীদের জন্য কারি পাতা খুবই কার্যকরী। শরীরে গ্লুকোজ উৎপাদনে বাধা তৈরি করে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে কারিপাতা। এই পাতার নির্যাস ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি প্রতিরোধ করতে পারে।শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে এই উপাদানটি। অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বশে থাকলে রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বা ‘এল়ডিএল’ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ‘এইচডিএল’ বা ভাল কোলেস্টেরল বাড়িয়ে তুলতে উদ্দীপকের মতো কাজ করে। খালি পেটে কারিপাতা খাওয়ার অভ্যাস কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের জন্যেও ভাল, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। 

পুদিনা পাতা- রান্নায় শুধু স্বাদ বর্ধনই করে না, পুদিনা পাতা স্বাস্থ্যেরও জন্যও খুবই উপকারী। স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। পুদিনাপাতা শরীরকে বিষমুক্ত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এর পাতার রস ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী; এটি কোলেস্টেরলের ভারসাম্যও বজায় রাখে। লিভারকে ডিটক্সিফাই করতে সাহায্য করে পুদিনা পাতা। 

নিমপাতা- ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ নিমপাতা। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে এবং সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। নিম পাতা এলডিএল অর্থাৎ খারাপ কোলেস্টেরল) এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। খালি পেটে কিছু নিম পাতা চিবিয়ে খাওয়া বা জলে ফুটিয়ে পান করা খুবই উপকারী। ঘরোয়া পথ্য হিসাবে নিমপাতার গুণের জবাব নেই! সঠিক নিয়মে নিমপাতা খেলে বহু রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।