আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্তন্য না আইসক্রিম? ধরতে পারবেন না। এমনিই নাকি স্বাদ তাঁদের সদ্য তৈরি করা একটি আইসক্রিমের। ব্রুকলিনের একটি সংস্থার তৈরি একটি অনন্য স্তনদুগ্ধের স্বাদযুক্ত আইসক্রিম নিউ ইয়র্কের বাসিন্দাদের মধ্যে কৌতূহল জাগিয়ে তুলেছে। ব্রুকলিনের ডাম্বো এলাকায় অবস্থিত, অডফেলোস আইসক্রিম সংস্থা একটি সীমিত সংস্করণ ‘ব্রেস্ট মিল্ক’ আইসক্রিম চালু করেছে। ঘোষণার পর থেকেই পণ্যটি স্থানীয়দের মধ্যে প্রবল আগ্রহ তৈরি করেছে। ওয়াটার স্ট্রিটে কোম্পানির আউটলেটের বাইরে এটি চেখে দেখার জন্য বিপুল সংখ্যক লোক জড়ো হচ্ছেন রোজ।
নিউ ইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুসারে, এই আইসক্রিমটি প্রকৃত স্তনদুগ্ধু থেকে তৈরি নয়। তবে এতে রয়েছে লিপোসোমাল বোভাইন কোলোস্ট্রাম নামক উপাদান যা সাধারণত বুকের দুধে পাওয়া যায়। অডফেলোস আইসক্রিম সংস্থা তাদের আউটলেটগুলিতে এই অনন্য স্বাদটি চালু করা মাধ্যমে স্থানীয়দের কাছে এই নতুন ফ্লেবারকে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। মেনু দেখেই গ্রাহকদের চোখ ধাঁধিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে আলাদা হওয়ার সময় কত টাকা পেয়েছিল পাকিস্তান, কোথায় খরচ করা হয়েছিল সেই অর্থ
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে বুকের দুধের স্বাদযুক্ত এই আইসক্রিমটি ফ্রিডা নামক একটি শিশুপণ্য তৈরির সংস্থার সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৈরি করা হয়েছে। সকলের মধ্যে আগ্রহ বজায় রাখতে, সংস্থাটি তার আউটলেটের বাইরে কৌতূহলী নিউ ইয়র্কবাসীদের জন্য প্রতিদিন মাত্র ৫০টি স্কুপ বিনামূল্যে অফার করছে।

রকঅ্যাওয়ে বিচ ফেরি ধরতে যাওয়ার পথে চার্লিন রিমশার চোখে আইসক্রিমটি পড়ে। নিউ ইয়র্ক পোস্টের উদ্ধৃতি অনুযায়ী, ক্যালিফোর্নিয়ার ম্যামথ লেকের চার্লিন রিমশা বলেন, "১৯৭৪ সাল থেকে ১৯৭৮ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমার মা আমাকে বুকের দুধ খাইয়েছেন, কিন্তু আমার মনে নেই। এই আইসক্রিমের ফ্লেবার আমায় অবাক করেছে।"
তাঁর বন্ধু ডেল কাপলান অবশ্য তেমন উপভোগ করেননি আইসক্রিমটি। তিনি মনে করেন যে আইসক্রিমটির স্বাদে বিশেষত্ব কিছুই ছিল না। তিনি বলেন, "সব আইসক্রিম কি বুকের দুধ দিয়ে তৈরি নয়? সব আইসক্রিম কি গরুর দুধ থেকে তৈরি নয়? মনে হচ্ছে এটি আইসক্রিমের জন্য আলাদা শব্দ। কারণ আইসক্রিম অবশ্যই বুকের দুধ দিয়ে তৈরি হতে হবে। আমি কি ভুল বলছি?"
ব্রুকলিনের অপর এক গ্রাহক, ডেল ডব্লিউ, আইসক্রিম নিয়ে ভিন্ন সমস্যায় পড়েছেন। তিনি বলেন, "আমি আশা করেছিলাম এটিতে আরও দুধের স্বাদ পাবে, আরও তীব্র দুধের স্বাদ। কিন্তু এটি তা নয়।
গত ২৯ মার্চ ফ্রিডা এই আইসক্রিম বাজারজাত করার কথা ঘোষণা করেছিল। সংস্থার তরফ থেকে দাবি করা হয়েছিল, বড় হয়ে যাওয়ার পর অধিকাংশ মানুষেরই আর মাতৃদুগ্ধের স্বাদ মনে থাকে না। সেই স্মৃতি ফিরিয়ে দিতেই অবিকল একই স্বাদ ও গন্ধের এই আইসক্রিম তৈরি করেছে তারা। গ্রাহকরা জানাচ্ছেন আইসক্রিমটির স্বাদ হালকা মিষ্টি। সঙ্গে কিছুটা বাদাম এবং নোনতা স্বাদও রয়েছে। সংস্থার দাবি শুধু স্বাদ নয়, আইসক্রিমটি পুষ্টিগুণের দিক থেকেও স্বাস্থ্যকর। এতে রয়েছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন বি, ভিটামিন ডি এবং জিঙ্ক।
তবে স্বাদে এক রকম হলেও আইসক্রিম তৈরিতে সত্যিকারের স্তন দুগ্ধ ব্যবহৃত হয়নি। মার্কিন খাদ্য সুরক্ষা নিয়ামক সংস্থা ইউএসডিএ তার অনুমোদন দেয় না। এখনও পর্যন্ত সংস্থার সমীক্ষা বলছে, ৭০ শতাংশ নতুন মা নিজের স্তন্যের স্বাদ পেতে আগ্রহী। তবে পুরুষদের মধ্যে এই প্রবণতা কিছুটা কম। ২৯ শতাংশ পুরুষ এই আইসক্রিমের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে সংস্থার পক্ষ থেকে।
