আজকাল ওয়েবডেস্ক: সময়ের পরিবর্তনে সঙ্গে সঙ্গে সাধনের পরিবর্তন হওয়াও স্বাভাবিক। তাই কালের নিয়মেই বঙ্গহেঁশেলে মশলা করার জন্য এসে গিয়েছে মিক্সার গ্রাইন্ডার। তা ছাড়া এখন প্যাকেটেই অধিকাংশ মশলা কিনতে পাওয়া যায়। তবু এখনও গ্রাম মফস্বলের বহু গৃহস্থলিতে শিল নোড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ রান্নার সামগ্রী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। প্রাচীন এই পদ্ধতির ব্যবহার শুধু ঐতিহ্য নয়, রয়েছে নানা উপকারিতা যা স্বাস্থ্য এবং খাবারের স্বাদ দুটোই সমৃদ্ধ করে।
শরীরের উপকারিতা
১. পুষ্টি রক্ষা: ব্লেন্ডারে মশলা করার সময় তাপ উৎপন্ন হয়, কিন্তু শিল নোড়ায় বাটা মশলা অতিরিক্ত গরম হয় না, ফলে খাবারের স্বাভাবিক পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ন থাকে।
২. রাসায়নিকমুক্ত জীবনধারা: যান্ত্রিক গ্রাইন্ডারে ব্যবহৃত প্লাস্টিক বা ধাতব অংশ থেকে ক্ষতিকর মাইক্রো প্লাস্টিক মিশে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। শিল নোড়া একেবারে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে খাদ্য প্রস্তুত করে। বাজার থেকে কেনা মশলায় অনেকসময় কৃত্রিম রং ও রাসায়নিক মেশানো থাকে।
৩. হজমে সহায়তা: শিল নোড়ায় বাটা মশলা সাধারণত বেশি মসৃণ হয় না, এতে থাকা সূক্ষ্ম আঁশ বা ফাইবার হজমে সহায়ক।
রান্নার স্বাদে পরিবর্তন
১. স্বাদ ও ঘ্রাণে পার্থক্য: শিল নোড়ায় বাটার ফলে মশলার আসল স্বাদ ও ঘ্রাণ বেরিয়ে আসে, যা রান্নাকে অধিকতর সুস্বাদু করে তোলে।
২. মশলা মেশানোর প্রাকৃতিক পদ্ধতি: ধীরে ধীরে মশলা বাটার ফলে বিভিন্ন উপাদানের মধ্যে একটি সমন্বয় তৈরি হয় যা মেশিনে সম্ভব নয়।
পরিবেশবান্ধব দিক
শিল নোড়া বিদ্যুৎবিহীন একটি যন্ত্র। এটি ব্যবহার করার জন্য কোনও বৈদ্যুতিক শক্তির অপচয় হয় না, ফলে এটি পরিবেশবান্ধব।
সব মিলিয়ে শিল নোড়া শুধু একটি রান্নার সামগ্রী নয়, এটি আমাদের ঐতিহ্যের অংশ, স্বাস্থ্যকর খাদ্য তৈরির সহায়ক। আধুনিকতার ছোঁয়া আসার পরেও প্রাচীন এই পদ্ধতির গুরুত্ব আজও অম্লান, যা আমাদের আরও একবার প্রকৃতির দিকে ফিরে যেতে উৎসাহিত করে।
