চিয়া সিডসকে শরীরের জন্য একটি সুপারফুড হিসাবে ধরা হয়। বর্তমানে চিয়া সিডস খাওয়ার চল অনেক বেড়েছে। এই ছোট ছোট দানাগুলো ভরপুর থাকে পুষ্টিগুণে। কেউ চিয়া সিডস দিয়ে পুডিং বানিয়ে খান, আবার কেউ এগুলো স্যালাডের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে ভালবাসেন। সব মিলিয়ে এর সঠিক পরিমাণে সেবন শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন যদি মাত্র এক চামচ চিয়া সিডস ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তবে শরীরের স্বাস্থ্যে অসাধারণ উন্নতি লক্ষ্য করা যায়।
হার্ভার্ড হেলথ–এর রিপোর্ট অনুযায়ী, চিয়া সিডসে প্রচুর ফাইবার থাকে, যা হজমকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা প্রতিরোধ করে। চিয়া সিডস খেলে পেটের ফোলা ভাব কমে এবং খাবার সহজে হজম হয়। যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে, তারা নিয়মিত চিয়া সিডস খেলে স্বস্তি পাবেন। এছাড়া, চিয়া সিডস ওজন কমাতেও সহায়ক। এর মধ্যে থাকা ফাইবার ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। ফলে ক্ষুধা কম লাগে এবং অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা যায়। এগুলো শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতেও কার্যকর।
চিয়া সিডসে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড হার্টকে সুস্থ রাখে। এটি শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং ভাল কোলেস্টেরল বাড়ায়। এছাড়া এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন চিয়া সিডস খেলে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে। এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে শক্তি জোগায়। বিশেষত যারা সারাদিন কাজ করেন বা ব্যায়াম করেন, তাদের জন্য চিয়া সিডস এক অসাধারণ পছন্দ। এগুলো ক্লান্তি দূর করে এবং শরীরের সহনশক্তি বাড়ায়।
চিয়া সিডসে প্রচুর ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস থাকে, যা হাড় মজবুত করতে সাহায্য করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড় দুর্বল হতে শুরু করে, কিন্তু চিয়া সিডস খেলে হাড়ের ঘনত্ব বাড়ে এবং অস্টিওপোরোসিসের মতো সমস্যার ঝুঁকি কমে। শুধু তাই নয়, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতেও সহায়ক। এতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকায় খাবারের পর রক্তে শর্করা দ্রুত বেড়ে যেতে বাধা দেয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও চিয়া সিডস নিরাপদ।
চিয়া সিডস আসলে এক আধুনিক জীবনধারার সহজ সঙ্গী। ব্যস্ততার মাঝে শরীরকে সঠিকভাবে পুষ্টি দেওয়ার জন্য এটি হতে পারে একটি কার্যকর বিকল্প। নিয়মিত এবং সঠিক পরিমাণে ডায়েটে যুক্ত করলে এটি শুধু শরীরকে ভিতর থেকে মজবুতই করে না, বরং সামগ্রিক সুস্থতায়ও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই সুস্থ জীবনযাপনের জন্য চিয়া সিডসকে ছোট্ট কিন্তু শক্তিশালী পদক্ষেপ হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে।
