আজকাল ওয়েবডেস্ক: শরৎচন্দ্রের অতিথি গল্পের কথা মনে পরে? যেখানে এক অচেনা কুকুরকে ছেড়ে আসতেও চোখে জল চলে আসে কথকের? বিষয়টি যে আজও কত প্রাসঙ্গিক তার প্রমাণ মিলছে বিভিন্ন ধরনের থেরপির ক্ষেত্রে। মানসিক স্বাস্থ্যের অব্যর্থ দাওয়াই হিসাবে প্রচলন বাড়ছে পোষ্যদের। আধুনিক জীবনের চাপ ও একাকিত্বের মোকাবিলায় পোষ্য প্রাণীরা যেন এক নির্ভরযোগ্য বন্ধু। কুকুর, বিড়াল বা অন্য কোনও পোষ্য শুধুমাত্র বিনোদন বা সাহচর্যের উৎস নয়, মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও এদের ভূমিকা অনস্বীকার্য বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পোষ্য প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটালে শরীরে ‘অক্সিটোসিন’ নামক ‘লাভ হরমোন’-এর নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়, যা মানসিক চাপ কমাতে ও মন ভাল রাখতে সাহায্য করে। পোষ্যের নিঃশর্ত ভালবাসা ও নির্ভরতা মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং একাকিত্ব দূর করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা পোষ্য পালন করেন, তাঁদের মধ্যে হৃদরোগের ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম থাকে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। পোষ্যের যত্ন নেওয়া, তাদের খাওয়ানো বা হাঁটতে নিয়ে যাওয়ার মতো দৈনন্দিন কাজগুলো জীবনের একটি শৃঙ্খলা এনে দেয়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মানসিক বিকাশে এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে পোষ্যরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আজকাল বিভিন্ন থেরাপিতেও পোষ্য প্রাণীদের ব্যবহার করা হচ্ছে, যা ‘অ্যানিম্যাল-অ্যাসিস্টেড থেরাপি’ নামে পরিচিত।
একটি পোষ্য প্রাণী ঘরে আনা মানে শুধু একটি জীবকে আশ্রয় দেওয়া নয়, বরং নিজের মানসিক শান্তি ও সুস্থতার পথে একধাপ এগিয়ে যাওয়া। তাই পোষ্যরা আজ বহু মানুষের জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে।
