আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাতাসে হালকা শিরশিরানি। কোথাও কোথাও ভোরে কুয়াশার চাদরে ঢাকা। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই আবহাওয়া জানান দিচ্ছে, শীত আসতে আর বেশি দেরি নেই। হালকা শীতের আমেজ পাওয়া যাচ্ছে জেলায় জেলায়। তবে কি চলতি সপ্তাহ থেকেই ভরপুর শীতের আমেজ পাওয়া যাবে? আগেভাগেই শীত এসে হাজির হল বাংলায়? 

আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহেই বাংলার আবহাওয়ায় বড়সড় বদল আসতে চলেছে। বঙ্গোপসাগরে ফের ঘনীভূত হচ্ছে নিম্নচাপ। এর জেরে রাজ্যে আবারও জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়বে। ফলে শীতের আমেজ সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে আর পাওয়া যাবে না। তার আগে ও পরে হালকা শীতের আমেজ পাওয়া যাবে ভোর ও সন্ধ্যায়। 

আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব মধ্যে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫.৮ কিলোমিটার ওপরে ঘূর্ণাবর্তটি রয়েছে। ধীরে ধীরে এটির উত্তর- উত্তরপশ্চিম দিকে এগোনোর সম্ভাবনা। মৎস্যজীবীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে সমুদ্র উত্তাল হবে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে প্রায় ৫৫ কিলোমিটার গতিতে।

হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, আজ সোমবার ও আগামিকাল মঙ্গলবার কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের কোনও জেলাতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। মূলত শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। হালকা শীতের আমেজ পাওয়া যাবে। রোদ ঝলমলে আকাশ থাকবে। বুধবার থেকেই আবারও উপকূলের জেলাগুলিতে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। 

আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের নদিয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক-দু'টি স্থানে বজ্রবিদ্যুৎ সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। কোনও সতর্কতা নেই। আবার আগামী শুক্রবার দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় মূলত শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। কমে যাবে ঝড়বৃষ্টির দাপট। 

জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমলেই শীতের আমেজ ফের পাওয়া যাবে দক্ষিণবঙ্গে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা দু'-তিন ডিগ্রি সেলসিয়াস কমবে। নিম্নমুখী তাপমাত্রার কারণে, হালকা শিরশিরানি অনুভূত হবে। তারপর আবারও কয়েকদিন তাপমাত্রার কোনও পরিবর্তন হবে না। নিম্নচাপ দূরে সরলেই ফের পারদ পতন হবে বঙ্গে।

অন্যদিকে আজ সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত গোটা উত্তরবঙ্গেই মূলত শুষ্ক আবহাওয়া থাকবে। চলতি সপ্তাহে কোথাও বৃষ্টির পূর্বাভাস নেই৷ উত্তরবঙ্গের উঁচু পাহাড়ি এলাকায় শীতের আমেজ পাওয়া যাবে। তাপমাত্রা খানিকটা কমবে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও। 

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তরবঙ্গের বহু জেলায় মাঝারি থেকে ভারী, এমনকি অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার কিছু অঞ্চলে টানা বৃষ্টিতে একাধিক নদীর জলস্তর বেড়ে গেছে। পাহাড়ি ও তরাই অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত ভূমিধসের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি জেলায় হালকা বৃষ্টি হয়েছে, তবে বড় ধরনের প্রভাব দেখা যায়নি। 

আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগের নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে। তবে এর প্রভাবে উত্তরবঙ্গে মেঘলা আকাশ ও বিচ্ছিন্ন বৃষ্টিপাতের প্রবণতা পরবর্তী এক-দু’দিন স্থায়ী হতে পারে। বিশেষ করে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও দার্জিলিং জেলার প্রশাসনকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে, যাতে অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা বা ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা এড়ানো যায়।