শীতের সকাল হোক বা বিকেল, অথবা কাজের ফাঁকে কোনও এক সময়, এক কাপ গরম কফি শরীর, মন দুইকেই চনমনে রাখে। কেউ কেউ চিনি দিয়েই কফি খান, আর যাঁরা স্বাস্থ্যের দিকে বেশি খেয়াল রাখেন তাঁরা চিনি ছাড়া খান। কিন্তু জানেন কি এই পছন্দের পানীয়তে চিনির বদলে যদি এক চিমটে নুন দেন তাহলে এর উপকারিতা দ্বিগুণ হয়ে যায়? একই সঙ্গে কফি খাওয়ার যে নেতিবাচক দিক রয়েছে সেটাও হ্রাস পায়।
তবে এই বিষয়ে জানিয়ে রাখা ভাল, কফিতে এক চিমটে নুন দিয়ে খাওয়া কিন্তু হাল আমলের কোনও জিনিস নয়। বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যের একটি বহু পুরনো রেওয়াজ, যা নতুন করে ট্রেন্ডে উঠে এসেছে। কিন্তু কেন নুন দেওয়া হয় কফিতে? কী এর উপকারিতা?
জানা যাচ্ছে, কফিতে এক চিমটে নুন দিলে এই পানীয় খাওয়ার পর অনেক সময়ই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস, সেই সময় কমে। একই সঙ্গে এর ফ্লেভারকে স্মুদ করে। সম্প্রতি একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। রোমের সেই ভিডিওতে বলা হচ্ছে, চিকিৎসকরা এই বিষয়ে কথা বলেন না, কিন্তু কফিতে এক চিমটে নুন দিলে সেটা আপনার নার্ভদের নিয়ে খেলা বন্ধ করতে পারে। এই বিষয়ে সহমত পোষণ করেছেন পুষ্টিবিদরাও।
তবে পুষ্টিবিদদের মধ্যে নুন কফির সমস্ত নেতিবাচক দিক প্রতিরোধ করে সেটা নয়। তবে, অনেকটা কমায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে উল্টো হতে পারে। কাদের ক্ষেত্রে কফিতে নুন দিয়ে খেলে সমস্যা হবে? যাঁরা উদ্বেগ, দুশ্চিন্তায় ভোগেন, নার্ভের সমস্যা রয়েছে তাঁদের সমস্যা হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই এটা খাওয়া উচিত।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন একাধিক অ্যাথলিট তাঁদের কফিতে নুন মিশিয়ে খান মূলত সেটায় ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালেন্স করার জন্য। একই সঙ্গে কফির উগ্র তিক্ততা কমায় নুন। একাধিক দেশে এই চল রয়েছে। কিন্তু উদ্বেগ কমায় সেটা সত্য নয়। বরং বাড়িয়ে দিতে পারে কিছু ক্ষেত্রে।
তবে হ্যাঁ, এটা ঠিক কফিতে নুন মিশিয়ে খেলে গ্যাস, অ্যাসিডিটির সমস্যা কমতে পারে, কারণ তাতে কফিতে কম অ্যাসিডিক করে দেয় নুন। কিন্তু কফির পিএইচ লেভেল বদলায় না। যাঁদের ক্রনিক অ্যাসিডিটির সমস্যা আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে আবার নুন অ্যাসিড রিফ্লাক্সকে বাড়িয়ে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, কফিতে নুন মিশিয়ে খাওয়াটা মূলত সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে। কফির তিক্ত স্বাদ কমানোর পাশাপাশি, কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যাসিডিটির সমস্যা রোধ করায় উপকারী হলেও, এর প্রমাণিত কোনও উপকারিতা নেই।
ফলে কফিতে চিনির বদলে নুন খাবেন কিনা, খেলেও দিনে কতবার সেটা খাওয়া উচিত তা অবশ্যই আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।
