আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফেসবুকে প্রেম, তার পরেই সব নিয়ম নীতি মেনে বিয়ে। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই নতুন বউয়ের আচরণে সন্দেহ জাগে পরিবারের। শেষ পর্যন্ত তাঁর পরিচয়ের পর্দাফাঁস হতেই চক্ষু চড়কগাছ সকলের।
দেড় মাস আগে বিয়ে হয়েছিল এক যুবকের। নতুন বউকে নিয়ে সুখের সংসারও চলছিল। কিন্তু সেই সুখ স্থায়ী হল না। দেড় মাস পর জানা গেল, যাঁর সঙ্গে এত দিন ঘর করলেন যুবক, সেই ‘বধূ’ নারীই মঞ্জ তিনি একজন পুরুষ! শুক্রবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বাংলাদেশের রাজবাড়ির গোয়ালন্দ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, স্বামীর নাম মাহমুদুল হাসান শান্ত। আর যাঁর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল, সেই ‘সামিয়া’র আসল নাম মহম্মদ শাহিনুর রহমান। চট্টগ্রামের আমতলা ঈদগাহ বৌবাজার এলাকার বাড়ি শাহিনুর-এর। অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরেই ফেসবুকে ‘সামিয়া’ নামে এক তরুণীর ভুয়ো প্রোফাইল চালিয়ে আসছেন তিনি। কেউ ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালে তাঁর কাছেও তরুণীর পরিচয় দিয়ে আসছিলেন তিনি। সেই সূত্রেই শান্তর সঙ্গে আলাপ। এর পর গত ৭ জুন শান্তর বাড়িতে এসে ওঠেন ‘সামিয়া’। পরিবারের সম্মতিতেই স্থানীয় বাসিন্দা এবং মৌলবির উপস্থিতিতে শান্তর সঙ্গে তাঁর বিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: শুক্রাণু দান করে কত টাকা আয় হয়? ভারতে বীর্য দাতা হতে গেলে কোন কোন নিয়ম জানতে হবে?

তার পর থেকে নববধূর মতোই শান্তর পরিবারে থাকছিলেন ‘সামিয়া’। তাঁর আচার আচরণ এমনই ছিল যে দেড় মাসেও কেউ ঘুণাক্ষরে টের পাননি যে তিনি আসলে পুরুষ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। সম্প্রতি তাঁর কিছু আচরণে শান্ত এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের সন্দেহ হয়। শুক্রবার বিকেলে অবশেষে পর্দাফাঁস হয় গোটা বিষয়টির। ‘সামিয়া’ যে আদতে এক জন পুরুষ, তা নিশ্চিত হতেই এলাকায় হুলস্থূল পড়ে যায়। ঘটনাটি দ্রুত সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে।
সংবাদমাধ্যমকে শান্ত জানান, ফেসবুকেই সামিয়ার সঙ্গে আলাপ এবং প্রেমের সম্পর্ক। এর পর হঠাৎই সে বাড়িতে চলে আসায় উপায়ান্তর না দেখে পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন তাঁরা। কিন্তু প্রেমিকার জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় বিবাহের নথিভুক্তিকরণ বাকি ছিল। শান্ত জানান বিয়ের পর থেকেই শারীরিক ঘনিষ্ঠতা নিয়ে ‘সামিয়া’র আচরণ ছিল রহস্যজনক। শান্ত কাছে যেতে চাইলেই অসুস্থতার ভান করে সে বলত, চিকিৎসকের নিষেধ আছে।
শান্তর মা সোহাগী বেগম বলেন, “আমাদের পরিবারে একটা ছেলে বউ সেজে থাকল, আমরা বুঝতেই পারলাম না। মেয়ে সেজে ও আমাদের মন জয় করে নিয়েছিল।”
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর শনিবার, ২৬ জুলাই সকালে শাহিনুরকে তাঁর নিজের বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেয় শান্তর পরিবার।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ‘সামিয়া’ ওরফে শাহিনুর রহমান বলেন, “আমি শান্তর সঙ্গে যা করেছি, তা অন্যায় হয়েছে। আমার হরমোনজনিত সমস্যা রয়েছে, তাই নিজেকে মহিলা ভাবতে ভাল লাগে।”