আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার কলকাতার ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো শাখায় সফর করলেন এক বিশেষ অতিথি। এসপ্ল্যানেড থেকে হাওড়া ময়দান শাখায় গঙ্গার নিচ দিয়ে মেট্রোয় সফর করলেন ভারতে কানাডার হাইকমিশনার ক্রিস কুটার।

এদিন এসপ্ল্যানেড স্টেশন থেকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত এই স্মরণীয় যাত্রায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন কানাডা হাইকমিশনের কর্মকর্তারা।

সফরে সঙ্গ দেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অনুজ মিত্তল এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা।

এই সফরে উপস্থিত ছিলেন মেট্রো রেলের প্রিন্সিপাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার এবং প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশনস ম্যানেজার শ্রী সাত্যকি নাথ সহ মেট্রো রেল ও কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের বহু কর্মকর্তা।

হুগলি নদীর নিচ দিয়ে যাতায়াত করা এই বিশেষ মেট্রো ব্যবস্থাপনা দেখে হাইকমিশনার অত্যন্ত আনন্দ প্রকাশ করেন বলে জানানো হয়েছে মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে।

জানা গিয়েছে, মেট্রো রেল ও কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের কর্মকর্তারা তাঁকে পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো প্রকল্পের নির্মাণ প্রযুক্তি, টানেল বোরিং পদ্ধতি এবং এই জলের নিচে মেট্রো নির্মাণের সময় যে প্রকৌশলগত চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন হতে হয়েছিল, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন।

কলকাতা ও শহরতলির মোট ৫২ কিলোমিটারের ৪টি মেট্রো করিডোর নির্মাণাধীন। যার মধ্যে ২০ কিলোমিটার জমি অধিগ্রহণ এবং রাজ্য সরকারের ‘ইউটিলিটি’ স্থানান্তর সংক্রান্ত সমস্যার কারণে আটকে আছে বলে দাবি  রেল মন্ত্রকের।

কলকাতার ৪ টি মেট্রো প্রকল্পের কাজ কী কারণে বিলম্ব হচ্ছে, তার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেছেন রেলমন্ত্রী। বুধবার লোকসভার তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি ও শত্রুঘ্ন সিনহার প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ২০১৪ সালের আগে পর্যন্ত কলকাতা মেট্রোরেল ছিল ২৮ কিলোমিটার।

আর গত ১১ বছরে হয়েছে ৪৫ কিলোমিটার। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত তিন বছরে এবং বর্তমান আর্থিক বছরে মোট ৯৭ টি সমীক্ষা হয়েছে (‌‌১০ নতুন রেল লাইন, ৮৭ ডাবলিং)‌‌ এবং সম্পূর্ণ/আংশিকভাবে অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট দৈর্ঘ্য ৪,০০৪ কিলোমিটার।

শত্রুঘ্ন সিনহার প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব লিখিতভাবে জানিয়েছেন, জোকা-এসপ্লানেড রেল প্রকল্পে জোকা-‌মাঝেরহাট ৭.‌৭৪ কিলোমিটার পথের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।

বাকি ৬.‌২৬ কিলোমিটারে ‌জমি অধিগ্রহণ এবং ‘ইউটিলিটি ডাইভারশন’ সমস্যাগুলির কারণে কাজের অগ্রগতি ব্যাহত হয়েছে।

একইভাবে নিউ গড়িয়া-‌দমদম বিমানবন্দর লাইনের বেলেঘাটা-‌দমদম বিমানবন্দরের ২২ কিলোমিটার লাইনের কাজ শ্লথ গতিতে চলছে। কারণ ট্রাফিক ডাইভারশনের সমস্যা।

নোয়াপাড়া -‌বারাসাত লাইনে বিমানবন্দর থেকে মাইকেল নগর পর্যন্ত লাইনে জমিজটের কারণে কাজ থমকে আছে। এবার মেট্রো রেলের নিরাপত্তা ও নজরদারি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে ব্যবহৃত হতে চলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)।

ভারতীয় রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে মেট্রো রেলও চালু করতে চলেছে এই আধুনিক প্রযুক্তি ভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থা। 

জানা গিয়েছে, এআই ভিত্তিক একটি সফটওয়্যার চালু করা হবে মেট্রোরেলে। এই সফটওয়্যার সন্দেহজনক মানুষ বা যানবাহনের গতিবিধি, অনধিকার প্রবেশ, অযথা ঘোরাফেরা এবং ক্যামেরা ট্যাম্পারিং সহজেই শনাক্ত করতে সক্ষম হবে।

পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে পড়ে যাওয়া ব্যক্তি খুঁজে বের করা, নির্দিষ্ট রং শনাক্ত করা এবং মানুষের বা যানবাহনের সাথে রঙের অনুসন্ধান করাও সম্ভব হবে। নতুন প্রযুক্তি চালু হলে মেট্রো রেলের নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা আরও নির্ভুল ও আধুনিক হবে বলে আশাবাদী মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।