আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বামী আর ভালবাসেন না আগের মতো। সম্পর্কে প্রতারণা করছেন। স্বামীকে ফিরে পেতে নিজের সর্বস্ব খোয়ালেন চীনের এক বয়স্ক মহিলা। সেই টাকার মধ্যে ছিল তাঁর নাতির টিউশন ফি-ও। সব টাকা দিয়ে তিনি ত্বকের বলিরেখা দূর করার চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। জানা গিয়েছে, তার আবাসিক কমপ্লেক্সের মধ্যে একটি থেরাপি সেন্টারের মালিক মহিলাটিকে কাছের একটি প্লাস্টিক সার্জারি ক্লিনিকে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি সেখানে এই চিকিৎসাটি করিয়েছিলেন এই বিশ্বাসে যে এর ফলে তাঁর স্বামীকে আরও তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করবেন না। এই সিদ্ধান্তের ফলে তাঁকে ৮৬০০ মার্কিন ডলার খোয়াতে হয়েছে।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট (এসসিএমপি) জানিয়েছে, কুই নামের ওই মহিলা যখন প্লাস্টিক সার্জারি ক্লিনিকে যান, তখন একজন সার্জন তাকে বলেন যে তাঁর মুখে অনেক বেশি বলিরেখা রয়েছে এবং এটি তাঁর জন্য আরও দুর্ভাগ্যও বয়ে আনবে।

আরও পড়ুন: একটি চুল ফাঁস করে দিয়েছিল পাকিস্তানের পরমাণু পরিকল্পনা! নেপথ্যে অজিত ডোভালের সাহসী পদক্ষেপ

চিকিৎসক তাঁকে আরও বোঝান যে তাঁর চোখের চারপাশে কাকের পায়ের মতো বলিরেখা থাকার অর্থ হল তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গে প্রতারণা করছেন। জানা গিয়েছে, সার্জন কুইকে বোঝালেন যে তাঁর স্বামীর ভাগ্যের জন্য তাকে অবশ্যই ওই বলিরেখাগুলিকে সরিয়ে ফেলতে হবে। তাঁকে আরও বিশ্বাস করানো হয়েছিল যে তাঁর ভ্রুয়ের মধ্যবর্তী বলিরেখা দূর করলে তাঁর সন্তানদের সৌভাগ্য ফিরবে।

এসসিএমপি প্রতিবেদন অনুযায়ী, ক্লিনিকের কর্মীরা তাঁর ফোন কেড়ে নেওয়ার আগে তাঁকে তাড়াহুড়ো করে অনলাইনে অর্থ প্রদান করতে হয়েছিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই, ক্লিনিকে মোটা অঙ্কের টাকা পরিশোধ করে ফেলেছিলেন কুই। ক্লিনিকে চিকিৎসা নেওয়ার পর ৫৮ বছর বয়সী কুইয়ের মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাব শুরু হওয়ার পর, তাঁর মেয়ে ঘটনাটি জানতে পারেন। ব্যাথায় তিনি মুখও খুলতে পারছিলেন না। দেখা গিয়েছে যে কুইকে হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ফিলার ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল। এসসিএমপি উল্লেখ করেছে, মেডিকেল রিপোর্ট অনুযায়ী, তাঁকে এক বারে ১০টি হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ফিলার ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল।

পরে, কুইয়ের মেয়ে টাকা ফেরত দাবি করেন। তিনি আরও দাবি করেন যে ক্লিনিকটি তাঁর মায়ের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। তবে, ওই ক্লিনিক সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে কুইয়ের মেয়েকে আইনি পদক্ষেপ নিতে বলে।

আরও পড়ুন: চুরির পর পাপমুক্ত হতে কেদারনাথ দর্শন, তল্লাশি চালাতেই নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার একের পর এক টোটো

এই ঘটনায় ইন্টারনেটে নানা প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ব্যবহারকারীরা। একজন লিখেছেন, “ওই মহিলার উপর কাজ করেনি চিকিৎসাপ্রক্রিয়াটি”। অন্য একজন বলেছেন, কুইয়ের মুখে এখনও বলিরেখা রয়েছে। আরও একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “অনেক প্লাস্টিক সার্জারি ক্লিনিক চীনা জনগণের কুসংস্কার ব্যবহার করে তাদের ঠকায়, এবং এটি কাজও করছে”।

২০১৯ সাল থেকে, চীন চিকিৎসা শিল্পে মিথ্যা বিজ্ঞাপন এবং অযৌক্তিক চার্জ বন্ধ করার জন্য কঠোর লড়াই করে আসছে সে দেশের সরকার। সাতটি হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছে এবং তাদের ব্যবসা স্থগিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।