আজকাল ওয়েবডেস্ক: কথায় বলে, কুসন্তান থাকলেও, কুমাতা, কুপিতা নাকি হয় না। সম্প্রতি এক ঘটনা প্রমাণ করল, কুমাতাও আদতে থাকে। কলিযুগে এও সম্ভব। ঠিক কী ঘটেছে, এক মা তাঁর মাত্র ন'বছরের মেয়েকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। নিজেই সেটি জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এও জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন বলেই বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বড়সড় পোস্টে যুবতী জানিয়েছেন, তাঁর এক মেয়েকে বাড়িতে এক জামাকাপড়েই তাড়িয়ে দিয়েছেন। বাড়ির দরজা মেয়ের জন্য চিরকালের জন্য বন্ধ। আর তিনি মেয়েকে ঘরে আনবেন না। বাকি সন্তানদের দূরে তো রাখবেনই, এমনকী ওই মেয়ের কোনও দায়দায়িত্ব পালন করবেন না।
কারণ? ন'বছরের নাবালিকা মানসিক ভারসাম্যহীন। তার কারণে বাড়িতে মুহুর্মুহু অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ের আক্রমণাত্মক আচরণ ঘিরে প্রায়ই পরিবারে ঝামেলা শুরু হয়। এমনকী বাকি সন্তানদের উপরেও হামলা করে তার মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে। ছাড় পায় না পোষ্য সারমেয়টিও। সকলের প্রাণ বাঁচাতেই মেয়েকে তাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: অদ্ভুত! জীবিত মা-কে কফিনে তুলে চলল উদযাপন, গানবাজনায় মাতলেন গ্রামবাসীরা, ছেলেকে আশীর্বাদও করলেন
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। যুবতীর নাম, মেগলস। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেকে মেগলস নামেই পরিচয় দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, মেয়েকে বকাঝকা করেও কোনও লাভ হয়নি। প্রথমে ভেবেছিলেন, শাসন করে নিজেদের কবলে রাখতে পারবেন। কিন্তু মেয়ের বয়স যত বাড়ছে, তত সে আরও জেদি এবং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে।
তাঁর ও বাকি সদস্যদের উপর মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে কীভাবে অত্যাচার করেছে, কয়েকটি ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন তিনি। মেগলস জানিয়েছেন, একদিন ভরা রাস্তায় গাড়ি চালানোর সময় মেয়ে পিছন থেকে শক্ত করে হাত দিয়ে তাঁর চোখ বন্ধ করে দেয়। গাড়ি চালাতে চালাতে কোনও মতে চোখ থেকে হাত সরিয়ে দেন। সেদিন ওই রাস্তায় বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। তাঁর মৃত্যু তো হতেই পারত, এমনকী রাস্তার আরও বহু মানুষের বিপদ হতে পারত।

এখানেই শেষ নয়। তাঁর আরও দু'জন খুদে ছেলেমেয়েকে মারধর করত সে। ভারী ব্যাট দিয়ে বোনের মাথায় আঘাত করত। ছেলেকে খেতে দিত না। সারাদিন দুই ভাইবোনকে মারত। বাড়িতে এই সমস্যা নিয়ে সারাদিন অশান্তি হত। একবার পোষ্য সারমেয়কেও মারধর করে ঘরে আটকে রেখেছিল।
যুবতীর ধারণা ছিল, কয়েক বছর কড়া শাসনে থাকলে মেয়ের আচরণ হয়তো বদলে যাবে। কিন্তু সে আরও হিংস্র হয়ে উঠছে। অবশেষে বাড়ি থেকেই বের করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে মেয়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ রাখবেন না বলেও জানিয়েছেন। পরিবারের স্বার্থে, ছেলেমেয়েদের কারণেই তিনি এহেন পদক্ষেপ করছেন বলে জানিয়েছেন যুবতী।
পোস্টটি ইতিমধ্যেই হু হু করে ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। কেউ কেউ যুবতীকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। এত বড় পদক্ষেপ নিশ্চয়ই তিনি ভেবেচিন্তে নিয়েছেন বলেও লিখেছেন। তবে বেশিরভাগই তীব্র সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন তাঁকে। অধিকাংশের মতে, কলিযুগের কুমাতার নিদর্শন এই যুবতী।
একজন লিখেছেন, 'কড়া শাসনে কখনও শিশুরা বদলায় না। তাদের বুঝিয়ে বলতে হয়। তারা অবুঝ বলেই। মানসিক ভারসাম্যহীন শিশুর সঙ্গে মায়ের এমন আচরণ কখনও মেনে নেওয়া যায় না।' আরেকজন লিখেছেন, 'মানসিক ভারসাম্যহীন টের পাওয়ার পর চিকিৎসা করাননি কেন? যথাযথ চিকিৎসার আওতায় এলেই সমস্যা মিটে যেত।' আবার একজন লিখেছেন, 'আধুনিককালে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা। মানসিক ভারসাম্যহীনেরা সেই চিকিৎসার অধীনে থাকে। মেয়ের সঙ্গে মায়ের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করছি।'
