আজকাল ওয়েবডেস্ক: আমেরিকা-ভিত্তিক একটি সংস্থায় কর্মরত এক ভারতীয় কর্মচারীর হঠাৎ ছাঁটাইয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা একটি পোস্ট বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ওই কর্মচারী রেডিটে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে জানান, কীভাবে সংস্থার প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা (COO)-এর সঙ্গে মাত্র চার মিনিটের এক ভার্চুয়াল বৈঠকের মধ্যেই তাঁকে এবং ভারতের আরও অনেক কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়—কোনও পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই।

তিনি লেখেন, “দিনটা একদম স্বাভাবিক ভাবেই শুরু হয়েছিল। সকাল ৯টায় লগ ইন করি, এবং দেখি সকাল ১১টায় প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা-এর সঙ্গে একটি বাধ্যতামূলক মিটিংয়ের আমন্ত্রণ এসেছে। নির্দিষ্ট সময়ে মিটিং শুরু হতেই প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা সব অংশগ্রহণকারীর ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন বন্ধ করে দেন এবং জানান, ভারতের অধিকাংশ কর্মীকে সংস্থা থেকে ছাঁটাই করা হচ্ছে।” ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এই সিদ্ধান্ত কর্মীদের পারফরম্যান্সের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, বরং এটি সংস্থার অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ।

সবচেয়ে বেশি হতবাক করে কর্মীদের যে বিষয়টি, তা হল সংস্থার এই আচরণে সম্পূর্ণ মানবিকতার অভাব। প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা কোনও প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন এবং মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই বৈঠক শেষ করে বেরিয়ে যান। পরে প্রভাবিত কর্মীদের জানানো হয় যে, তারা যদি ছাঁটাই তালিকায় থাকেন, তবে ই-মেইলের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে তা জানানো হবে।

ওই কর্মচারী আরও জানান, সংস্থা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, অক্টোবর মাসের পুরো বেতন মাসের শেষে দেওয়া হবে এবং অব্যবহৃত ছুটির অর্থও মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে তিনি আবেগঘন ভাষায় লেখেন, “এই প্রথমবার আমি চাকরি হারালাম, এবং এটা সত্যিই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা।”

আরও পড়ুন: ভারতকে চাপে ফেলার তোড়জোড়? আরব সাগরে বন্দর নির্মাণের জন্য আমেরিকাকে প্রস্তাব ইসলামাবাদের

এই ঘটনাটি রেডিট ও এক্স-সহ নানা সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়ে যায়। অসংখ্য ব্যবহারকারী সহানুভূতি জানিয়ে চাকরির পরামর্শ, যোগাযোগ এবং সহায়তার প্রস্তাব দেন। এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, “আপনি কোন প্রোফাইলে কাজ করেন? যদি সাহায্য করতে পারি, তাহলে ডিএম করুন।” আরেকজন লেখেন, “ভাই, আপনার ভূমিকা আর অভিজ্ঞতা কী? আমাকে মেসেজ করুন, হয়তো সাহায্য করতে পারব।” তৃতীয় এক ব্যবহারকারী অনুপ্রেরণামূলক বার্তা দিয়ে লেখেন, “এই সুযোগে ভেবে দেখুন আপনি সত্যিই কী করতে চান। আগের কাজও হতে পারে, আবার সম্পূর্ণ নতুন দিকেও যেতে পারেন। হতাশ হবেন না—এই অভিজ্ঞতা আপনাকে আরও শক্ত করে তুলবে। আপনার নেটওয়ার্কে যোগাযোগ করুন বা নতুন সম্পর্ক গড়ে তুলুন, যা পরবর্তী সুযোগের পথ খুলে দিতে পারে।”

সংস্থার তরফ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি। তবে এই ঘটনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—দূরবর্তী কর্মসংস্থানের এই যুগে কি কোম্পানিগুলোর মানবিক দায়বদ্ধতা ক্রমশ বিলুপ্ত হচ্ছে?