আজকাল ওয়েবডেস্ক: কতদিন ধরে আর হোয়াটসঅ্যাপের ওপর আপনি নির্ভর করে থাকবেন। সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। যত দিন এগিয়ে চলেছে ততই এই অ্যাপের বিকল্প তৈরি করার জন্য সকলে অপেক্ষা করছে। সেই তালিকায় এবার চলে এল আর একটি নাম।


টুইটারের একসময় প্রধান জ্যাক ডোরসে তার নতুন একটি আবিষ্কার করে সকলকে চমকে দিয়েছেন। তিনি বিটচ্যাট নামে একটি অ্যাপকে ডিজাইন করেছেন। এটি কাজ করবে আপনার ফোনের ব্লুটুথ দিয়ে। এখানে কোনও ইন্টারনেট পরিষেবা দরকার নেই। সেন্ট্রাল সার্ভিস লাগবে না। দরকার নেই কোনও ফোন নম্বর বা ইমেল।


তার মতে, ফোনে সবার আগে ছিল ব্লুটুথ। তবে কালে কালে মানুষ তাকে ভুলেছে। তবে এই শক্তিশালী ক্ষমতাকে ফের একবার তিনি ফিরিয়ে নিতে চান। এটি দিয়ে আপনি নিজের হোয়াটসঅ্যাপের মতোই কাজ করতে পারবেন। সেখানে থাকবে স্টোরেজ ঠিক যেমন হোয়াটসঅ্যাপে থাকে। 


বিটচ্যাটের একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব থাকবে। সেখান থেকে এটি আরামে কাজ করতে পারবে। যেহেতু এর সঙ্গে ইন্টারনেট থাকছে না তাই এটি বেশি দূরত্বে কাজ করতে পারবে না। তবে এটি ইতিমধ্যে সকলের মধ্যে সাড়া ফেলে দিয়েছে। 


ডরসি ঘোষণা করেছেন, ‘বিটচ্যাট’ অ্যাপটি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও আগ্রহী ব্যবহারকারীরা ‘টেস্টফ্লাইট’ নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে এর পরীক্ষামূলক সংস্করণটি ব্যবহার করতে পারেন।


এছাড়াও অ্যাপটির ‘হোয়াইট পেপার’ গিটহাব-এ প্রকাশ করেছেন ডরসি। হোয়াইট পেপার এমন এক ধরনের ডকুমেন্ট বা নথি, যেখানে নতুন প্রযুক্তি বা অ্যাপের কাজ করার পদ্ধতি, উদ্দেশ্য ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণ বিস্তারিতভাবে লেখা থাকে। যাতে মানুষ বুঝতে পারেন অ্যাপটি কীভাবে কাজ করে।
ডরসির অ্যাপটি কাছাকাছি থাকা বিভিন্ন ডিভাইসের মধ্যে অস্থায়ী ও এনক্রিপ্ট করা যোগাযোগকে সম্ভব করে তোলে। ফলে অ্যাপের বিভিন্ন মেসেজ নিরাপদ ও দীর্ঘসময় ধরে সংরক্ষিত হয় না।


ব্যবহারকারীরা যখন বিভিন্ন জায়গায় চলাফেরা করেন তখন তাদের হাতে থাকা ফোন স্থানীয় ‘ব্লুটুথ ক্লাস্টার’ তৈরি করে, অর্থাৎ কাছাকাছি থাকা ফোনগুলো নিজেদের মধ্যে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করে নেয়। নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একটি ফোন থেকে আরেক ফোনে মেসেজ পাঠানো যায়।
এভাবে, বিভিন্ন বার্তা এক ডিভাইস থেকে আরেকটিতে ‘রিলে’ হয়ে চলতে থাকে, ফলে মেসেজ সেই সব ব্যবহারকারীদের কাছেও পৌঁছাতে পারে, যারা সরাসরি ব্লুটুথ রেঞ্জের মধ্যে নেই। এভাবে এটি ওয়াইফাই ও মোবাইল নেটওয়ার্ক ছাড়াও কাজ করে।


‘বিটচ্যাট’ অ্যাপের আরও এক গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, এখানে কিছু ‘ব্রিজ’ ডিভাইস ব্যবহৃত হয় যেগুলো কাছাকাছি থাকা আলাদা বিভিন্ন ‘ব্লুটুথ ক্লাস্টার’-এর মধ্যে সংযোগ তৈরি করে। ফলে পুরো নেটওয়ার্ক সিস্টেমটি আরও বড় পরিসরে কাজ করতে পারে। অ্যাপটির আরও কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেমন– মেসেজের বার্তা কেবল ব্যবহারকারীর ডিভাইসেই সংরক্ষিত হয়, অন্য কোথাও নয়।