আজকাল ওয়েবডেস্ক: গণেশ চতুর্থীর দিন নিশ্চয়ই আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ফিডে নানা গণেশ মন্দিরের ছবি ও ভিডিও ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু জানেন কি, একটি আগ্নেয়গিরির ধারে বিরাজমান আছেন শ্রীগণেশ? ইন্দোনেশিয়ার মাউন্ট ব্রোমো অঞ্চলে রয়েছে প্রায় ৭০০ বছর পুরনো একটি গণেশমূর্তি। অনেকেই হয়তো জানেন না, ইন্দোনেশিয়ায় বিশাল হিন্দু জনসংখ্যা বাস করে। 


দেশ জুড়েই রয়েছে অসংখ্য গণেশ মন্দির এবং নাগরিকরা অত্যন্ত ভক্তিভরে সেখানে পূজা অর্চনা করে থাকেন। এর মধ্যে, আগ্নেয়গিরির ধার ঘেঁষে বসানো এই গণেশমূর্তিকে ঘিরে রয়েছে বিশেষ বিশ্বাস—স্থানীয়দের ধারণা, ভগবান গণেশ তাঁদের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে রক্ষা করেন।

আরও পড়ুন: পৃথিবীকে শীতল রাখতে চান? তাহলে গাছ লাগাতে হবে এখানেই


মূর্তিটির তাৎপর্য
বিশ্বাস করা হয়, প্রায় ৭০০ বছর আগে টেঙ্গের মাসিফ উপজাতির পূর্বপুরুষেরা এই গণেশমূর্তিটি স্থাপন করেছিলেন। আজও স্থানীয়রা এই মূর্তিতে পূজা দেন এবং নিয়মিত ফুল ও ফল নিবেদন করেন—যাতে আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাত না ঘটায় এবং তাঁদের ক্ষতি না করে। এটিকে এখন কঠোর এক প্রথা হিসেবে মানা হয়। স্থানীয়দের বিশ্বাস, যদি এই নিবেদন না করা হয়, তবে আগ্নেয়গিরি অগ্ন্যুৎপাত ঘটাবে এবং আশেপাশের মানুষদের গ্রাস করবে।


মাউন্ট ব্রোমো সম্বন্ধে আরও কিছু তথ্য
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ায় মোট ১৪১টি আগ্নেয়গিরি রয়েছে—যার মধ্যে ১৩০টি এখনও সক্রিয়। এর মধ্যে একটি হল মাউন্ট ব্রোমো। ‘ব্রোমো’ নামটি এসেছে ‘ব্রহ্মা’-এর জাভানিজ উচ্চারণ থেকে। রেকর্ড বলছে, ২০১২ সাল পর্যন্ত ইন্দোনেশিয়ায় ১২৭টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি ছিল, আর প্রায় ৫০ লক্ষ মানুষ এসব বিপজ্জনক অঞ্চলে বাস করত।


মাউন্ট ব্রোমো হল ব্রোমো-টেঙ্গের-সেমেরু ন্যাশনাল পার্কের অংশ। এটি প্রায় ৮০০ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। আকারে ইন্দোনেশিয়ার অন্য আগ্নেয়গিরির তুলনায় এটি ছোট হলেও এর অনন্য সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধ করে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা ২,৩৯২ মিটার হলেও এটি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে উঁচু পাহাড় নয়। তবুও চারপাশের দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক দৃশ্য মাউন্ট ব্রোমোকে অনন্য করে তুলেছে।

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 15, 2020


মাউন্ট ব্রোমোতে পৌঁছানোর জন্য আপনি সুরাবায়ার জুয়ান্ডা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামতে পারেন। সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর, হংকং, জাকার্তা এবং বালি থেকে সরাসরি ফ্লাইট পাওয়া যায় সুরাবায়ায়। সেখান থেকে সুরাবায়া–পাসুরুয়ান–ওয়োনোকিত্রি–মাউন্ট ব্রোমো রুট ধরে গাড়িতে পৌঁছানো যায়। পুরো যাত্রায় সময় লাগবে প্রায় ২–৩ ঘণ্টা।


তবে স্থানীয়দের মতো এখানকার গণেশ তাদেরকে আগ্নেয়গিরি থেকে রক্ষা করছে। যদিও এবিষয়ে যারা মানতে চান না তারা বিষয়টিকে অন্যভাবে দেখে থাকেন। তারা মনে করেন এই মূর্তিটি এমন একটি আগ্নেয়গিরির কাছে রয়েছে যেখানা বহু বছর ধরে আগ্নেয়গিরি জীবন্ত হয়নি। তবে স্থানীয়রা সেই কথা মানেন না। তাদের কাছে এই মূর্তি অতি শক্তিশালী যে তাদেরকে এই বিরাট বিপদের হাত থেকে রক্ষা করছে।