আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০০৯ সালে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সহজ করতে এক অভিনব পরিকল্পনা নিয়েছিল সুইডেন সরকার। ছাপানো বই বাদ দিয়ে চালু করা হয়েছিল কম্পিউটার ও অন্যান্য ডিজিটাল ডিভাইস। পড়ুয়াদের প্রযুক্তি-নির্ভর ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করাই ছিল প্রধান লক্ষ্য। ডিজিটাল মাধ্যমকে সস্তা, সহজলভ্য এবং ভবিষ্যৎবান্ধব হিসেবে ধরা হয়েছিল।
তবে ১৫ বছর পর এসে ২০২৫ সালে এই পদক্ষেপের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে সামনে এল বিশাল সমস্যা। বিভিন্ন গবেষণা গবেষণা বলছে, স্ক্রিনে পড়া অনেক ক্ষেত্রেই কাগজে পড়ার মতো কার্যকর নয়। স্ক্রিনের উজ্জ্বল আলো চোখের ওপর চাপ ফেলে এবং মনোযোগ কমায়। স্ক্রিনে পড়ার তুলনায় কাগজে পড়লে তথ্য ভালোভাবে বোঝা ও মনে রাখা যায়। তাছাড়া, ক্লাসরুমে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা সহজেই গেম বা ইন্টারনেটে ঢুকে পড়েন। ফলে, তারা আর পড়াশোনায় মন দিতে পারেন না।
এর ফলে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। অতিরিক্ত ডিজিটাল-নির্ভরতায় শিশুরা ধীরে ধীরে সামাজিক দক্ষতা এবং মনোযোগ হারিয়ে ফেলে। ইতিমধ্যেই, অনেক অভিভাবক এবং শিক্ষক এই সমস্যাগুলি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, কম্পিউটার বা ট্যাবলেট শিক্ষার বদলে বিনোদনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে, সুইডেন সরকার ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ১০৪ মিলিয়ন ইউরো বরাদ্দ করেছে পড়াশোনার পুরনো পদ্ধতিকে ফেরানোর জন্য। এই টাকা দিয়ে প্রত্যেক পড়ুয়ার জন্য প্রতিটি বিষয়ের কাগজের বই নিশ্চিত করা হবে।
পাশাপাশি, স্কুলগুলোকে আবার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা পদ্ধতিতে ফেরানোর জন্য প্রচার চালানো হবে। প্রচারণা চালানো হবে। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই পদক্ষেপ ডিজিটাল টুল পুরোপুরি বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়। বরং, প্রযুক্তিকে এমনভাবে কাজে লাগানো হোক যা শিক্ষার মৌলিক পদ্ধতিকে সমর্থন করে এবং আধিপত্য বিস্তার না করে বসে। সুইডেনের এই উদ্যোগ শিক্ষার ক্ষেত্রে ভারসাম্যের গুরুত্বের কথা মনে করিয়ে দেয় এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। সুইডেনের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই পরিবর্তন দেখিয়ে দেয়, কেবল প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে শিক্ষার গুণগত মান উন্নত করাই গুরুত্বপূর্ণ।
