আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ইতিহাসের দীর্ঘতম সরকারি শাটডাউন রবিবারও পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক হতে দেয়নি। এর ফলে রবিবার সকালেই বিভিন্ন এয়ারলাইন্স মিলে অন্তত ৯৪৫টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। পাশাপাশি, দেশে ও দেশের বাইরে যাতায়াতকারী ৩,৩০০টিরও বেশি ফ্লাইট মারাত্মক দেরির শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্লাইট মনিটরিং সংস্থা।
সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি দেখা গেছে শার্লট ডগলাস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে, যেখানে একাই প্রায় ১৩০টি ফ্লাইট বাতিল এবং ৩০০টিরও বেশি দেরি নথিভুক্ত হয়েছে। এর ঠিক পরেই রয়েছে শিকাগোর ও’হেয়ার ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, যেখানে ৮৩টি বাতিল ও ২৮০টির মতো দেরি হয়েছে।
ডালাস–ফোর্ট ওয়ার্থ এয়ারপোর্টে ৫৬টি বাতিল এবং প্রায় ১৮৯টি দেরি রেকর্ড হয়েছে, আর নিউ ইয়র্কের জন এফ. কেনেডি বিমানবন্দরে প্রায় ৫০টি ফ্লাইট বাতিলের পাশাপাশি ৩০০টির বেশি দেরির ঘটনা ঘটেছে।
শাটডাউন চলতে থাকলে সামনে আরও বিপর্যয়
বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি অচলাবস্থা আরও লম্বা হলে সামনে ছুটির সিজনে যাত্রীদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠবে। এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের ঘাটতি ইতিমধ্যেই বিপুল চাপ তৈরি করেছে। শাটডাউন চলতে থাকলে বছরের ব্যস্ততম ভ্রমণ সিজনে শত শত ফ্লাইট পুনরায় বাতিল বা দেরি হতে পারে।
পণ্য পরিবহণেও বড় প্রভাব
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় অর্ধেক বাণিজ্যিক মালবাহী কার্গো যাত্রীবাহী বিমানের কার্গো সেকশনে বহন করা হয়। ফলে বহুল ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্ব কার্গো চলাচলেও বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে পণ্য পরিবহণ খরচ বাড়বে, যা শেষ পর্যন্ত বাজারে পণ্যমূল্যেও প্রভাব ফেলবে।
শাটডাউনের কারণ: স্বাস্থ্যবিমা ভর্তুকি নিয়ে রাজনৈতিক টানাপোড়েন
চলতি আংশিক সরকারি শাটডাউনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ। মূল সংকট তৈরি হয়েছে Affordable Care Act (ওবামাকেয়ার)-এর স্বাস্থ্যবিমা ভর্তুকি নিয়ে।
এই ভর্তুকি চলতি বছরের শেষে বন্ধ হয়ে গেলে সাধারণ নাগরিকদের স্বাস্থ্যবিমার খরচ অনেক বেড়ে যাবে। সেনেট ডেমোক্র্যাটরা এই ভর্তুকি বজায় রাখতে চাইছে এবং অন্যান্য নীতি বিষয়েও আলোচনা চায়। রিপাবলিকানরা ভর্তুকি বাড়ানোর প্রস্তাব নাকচ করায় আলোচনায় অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
শাটডাউনের ফলে ফ্লাইট কমানোর নির্দেশ থেকে হাওয়াই রাজ্য বিশেষ ছাড় চেয়েছে। পরিবহন দপ্তর পরিবহনমন্ত্রী শন ডাফিকে পাঠানো চিঠিতে বলেছে যে, হাওয়াই দ্বীপ-নির্ভর হওয়ায় এয়ার ট্রাভেলই তাদের প্রধান জীবনরেখা। এসব কারণে হাওয়াইয়ের জন্য বিমান চলাচল অপরিহার্য। চলতি রাজনৈতিক অচলাবস্থার শেষ না হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আকাশপথে ভ্রমণ আরও নৈরাজ্যময় হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
