আজকাল ওয়েবডেস্ক: দেশের নাম ডোবানোর অভ্যাস হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানি নাগরিকদের। সম্প্রতি এক পাকিস্তানি ডাক্তার ইউকে ট্রাইব্যুনালে চলা একটি মামলায় স্বীকার করেছেন যে, অস্ত্রোপচার চলাকালীন তিনি অস্ত্রোপচারের মাঝখানেই রোগীকে রেখে দিয়ে নিকটবর্তী অপারেশন থিয়েটারে একজন নার্সের সঙ্গে যৌন কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছিলেন। ২০২৩ সালে এই কীর্তি করেছিলেন সুহেল আঞ্জুম নামে ওই পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ডাক্তার।
ডেইলি মেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৪৪ বছর বয়সী সুহেল ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ তারিখে গ্রেটার ম্যানচেস্টারের টেমসাইড জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। সেই দিন তিনি তাঁর তত্ত্বাবধানে থাকা পিত্তথলির অস্ত্রোপচার ছেড়ে মাঝপথেই চলে যান। লন্ডনের একটি ট্যাবলয়েড অনুযায়ী, অভিযুক্ত ডাক্তার এখন পাকিস্তানে কর্মরত। ১৬ সেপ্টেম্বর তাঁকে তাঁর প্যান্টের রশি বেঁধে থাকতে দেখা গিয়েছিল। তাঁর সহকর্মী নার্সকেও সেই সময় অর্ধনগ্ন অবস্থায় দেখে ফেলেন হাসপাতালে কর্মরত অপর এক নার্স।
ম্যানচেস্টার ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছে, সুহেল সে দিন সকালে পাঁচটি অস্ত্রোপচারের জন্য অ্যানেস্থেটিস্ট ছিলেন। তৃতীয় অস্ত্রোপচার চলাকালীন, তিনি সহকর্মীদের বলে একটু বিরতি নেন। সকলের মনে হয়েছিল তিনি সকলকে বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন। রোগীর দায়িত্বে একজন অ্যানেস্থেটিক নার্সকে রেখেছিলেন। পরে তাঁকে অন্য একটি অস্ত্রোপচার কক্ষে তাঁর সহকর্মী নার্সের সঙ্গে ‘আপত্তিকর অবস্থায়’ দেখতে পাওয়া যায়।
অস্ত্রোপচারের সময় ‘যৌন কার্যকলাপে’ লিপ্ত থাকার কথা স্বীকার করেছেন পাকিস্তানি ডাক্তার
ডেইলি মেইল জানিয়েছে, জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিলের প্রতিনিধিত্বকারী অ্যান্ড্রু মোলয় বলেন যে, এনটি নামে পরিচিত একজন স্ক্রাব নার্স থিয়েটার নম্বর আটে পরবর্তী প্রস্তুতির জন্য কিছু সরঞ্জাম খুঁজতে গিয়েছিলেন। তখনই তিনি দু’জনের কীর্তি দেখে ফেলেন।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় সুহেল স্বীকার করেছেন যে একজন রোগীকে অ্যানেস্থেশিয়া দেওয়ার সময় নার্সের সঙ্গে ‘যৌন কার্যকলাপে’ লিপ্ত হয়েছিলেন। শুনানিতে সুহেল বলেছিলেন যে তিনি তাঁর কাজের প্রতি যত্নবান। তাঁর ব্যাখ্যা, এই ঘটনাটির সময় তাঁর ব্যক্তিগত জীবন একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল। কারণ, তাঁর স্ত্রী তাদের ছোট সন্তানের অকাল মৃত্যুতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন।
তিনি ট্রাইব্যুনালকে বলেন, “এটি একটি লজ্জাজনক ঘটনা। এটা আমার কাছে কতটা লজ্জাজনক তা আমি প্রকাশ করতে পারব না। আমি সত্যিই দুঃখিত এবং লজ্জিত এবং আমার আচরণের গুরুত্ব সম্পূর্ণরূপে স্বীকার করছি।”
সুহেল আঞ্জুম কে?
লাহোরের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৪ সালে স্নাতক সুহেল আঞ্জুম তাঁর চিকিৎসা পেশা পুনরায় শুরু করার জন্য ব্রিটেনে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ২০১১ সালে ব্রিটেনে কাজ শুরু করেন। ব্রিস্টল, মিল্টন কেইনস এবং ডার্টফোর্ড হাসপাতালে বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি টেমসাইড এবং গ্লসপ ইন্টিগ্রেটেড ট্রাস্টে যোগদান করেন।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি ২০২৪ সালের অক্টোবরে ট্রাস্ট ত্যাগ করেন এবং জানুয়ারিতে পাকিস্তানে ফিরে আসেন। তার আগে পর্যন্ত লিভারপুলে কাজ করেছিলেন। এই ঘটনার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। সেখানেই এখন প্র্যাকটিস করেন।
