আজকাল ওয়েবডেস্ক: মৃত্যুর পর কী হয়? তা নিয়ে আজও মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। কেউ কেউ নানা কিছু কল্পনাও করেন। আবার মৃত্যুর মুখ থেকে যাঁরা ফিরে আসেন, তাঁদের জীবন সম্পর্কে বদলে যায় ধারণা। শুরু হয় জীবনের আরও এক নতুন অধ্যায়। 

 

ঠিক যেমনটা ঘটেছিল ২০১৮ সালে জুলিয়া ইভানসের সঙ্গে। সময়টা ২০১৮ সাল। অ্যালার্জির সমস্যা থেকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল জুলিয়ার। যার পরেই জীবন সম্পর্কে সমস্ত ধারণা তাঁর বদলে যায়। সম্প্রতি এক পডকাস্টে তাঁর কাহিনি শোনানো হয়। তা ঘিরে মানুষের কৌতূহলের পারদ চড়ে তুঙ্গে। 

 

জানা গেছে, লিলি ফুলের গন্ধে অ্যালার্জির সমস্যা হয় জুলিয়ার। সেই লিলি ফুলের গন্ধ নাকে যেতেই ভয়াবহ অ্যালার্জির সমস্যায় জেরবার হয়ে যান তিনি। সেই অ্যালার্জির ভয়াবহতা এমন পর্যায়ে পৌঁছয়, শেষমেশ হৃদরোগে আক্রান্ত হন জুলিয়া। কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় তাঁর। কিছুক্ষণের জন্য নাকি বন্ধ হয়ে যায় তাঁর হৃদস্পন্দন। 

 

জুলিয়ার মতে, সেই কয়েক সেকেন্ডে তিনি নিজেকে 'মৃত' মনে করেন। আর সেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মৃত্যু পরবর্তী পর্যায়ের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন তিনি। জুলিয়া পেশায় একজন নার্স। পডকাস্টে তিনি জানিয়েছেন, সেদিন সময় মতো হাসপাতালে ডিউটিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর টের পান, তাঁর গলায় ব্যথা করছে। ক্রমেই গলা ফুলে উঠছে। তারপর খেয়াল করেন, নার্সের বসার জায়গায় লিলি ফুলের তোড়া রাখা রয়েছে। 

 

আরও পড়ুন: নেই বিদ্যুৎ, দু'বেলা জুটছে না খাবার, ভয়াবহ বিপর্যয়ের পরেও পৌঁছল না রেশন, টাকা! উত্তরকাশীতে তুমুল বিক্ষোভ, মুখ পুড়ল পুষ্করের

 

অ্যালার্জির সমস্যা তখনই শুরু হয়ে গিয়েছিল। এরপর ফুলের কাছে আরও খানিকটা এগিয়ে যেতে ভয়ঙ্কর পরিণতি হয় তাঁর। জ্ঞান হারিয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি। বাকি নার্সরা তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসা শুরু করেন। খবর দেওয়া হয় তাঁর স্বামীকে। সেই সময় শ্বাসকষ্টের সমস্যা হচ্ছিল জুলিয়ার। একজন চিকিৎসক এসে ইনজেকশন দেন। কিন্তু সেখানেই মারাত্মক ভুল করেন ওই চিকিৎসক। 

 

সিরিঞ্জে সঠিক ডোজের তুলনায় দশগুণ বেশি ওষুধ ছিল। যার জেরে জুলিয়ার হৃদস্পন্দন কয়েকগুণ বেড়ে যায়। রীতিমতো হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার মতোই মনে হচ্ছিল জুলিয়ার। তখনও চিকিৎসকরা জুলিয়াকে বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছিলেন। তখন জুলিয়ার চোখের সামনে অন্ধকার ঘনিয়ে আসে। তখনই মৃত মায়ের কন্ঠস্বর শুনতে পান তিনি। 

 

জুলিয়া জানিয়েছেন, ১৯৮৩ সালে মস্তিষ্কের বিরল অসুখে মায়ের মৃত্যু হয়েছিল। হাসপাতালের বিছানায় যখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়েছিলেন, তখন জুলিয়া শুনতে পান তাঁর‌ মা বলছেন, 'চিন্তা করো না সোনা, মা তোমার সঙ্গে আছে!' এরপর দেখতে পান, হঠাৎ করে একটি নির্জন এলাকায় পৌঁছে গেছেন জুলিয়া। চারিদিকে আলো আর আলো। আর চারপাশে তাঁর ভালবাসার মানুষেরা। সকলকে কাছে পেয়ে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন তিনি। 

 

সেই দৃশ্যটি দেখতে দেখতেই প্রবল ঝাঁকুনিতে কেঁপে ওঠে জুলিয়ার শরীর। তারপর ফের তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। এই অভিজ্ঞতার কথা একটি বিয়ে লিখেছেন জুলিয়া। 'দ্য লিলি নার্স' নামের বইয়ে 'মৃত্যু'র পরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। যা ইতিমধ্যেই বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছে পাঠক মহলে।