আজকাল ওয়েবডেস্ক: পৃথিবীতে এল নতুন ভাইরাস। যেখান থেকে একে পাওয়া গিয়েছে তা দেখে রীতিমতো অবাক বিজ্ঞানীরা। কানাডার প্রশান্ত মহাসাগরের তীরের যে ঝিনুক মেলে সেখান থেকেই মিলেছে এই নতুন ভাইরাসকে। এরা জলের সঙ্গে এখনও মিশতে পারেনি। তাই এরা ঝিনুকের দেহে বাসা করেছে। তবে কেন এরা ঝিনুককে বেছে নিল তা নিয়ে তৈরি হয়েছে বিরাট প্রশ্ন।
গবেষকরা ৩৩ টি ঝিনুক নিয়ে আসেন একটি ফার্ম থেকে। এরপর তারা ২৬ টি ঝিনুক নিয়ে আসেন সমুদ্র থেকে। সেখান থেকেই তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় নতুন এই ভাইরাসের কাহিনী। একেবারে সাধারণ বলে মনে হলেও এর প্রভাব অতি ভয়ানক। যে ঝিনুকের দেহে এই ভাইরাস মিলেছে সেখান থেকে তাদের মৃত্যু ঘটছে।
আরও পড়ুন: ইউএএন নম্বর করতে হলে এবার মানতে হবে এই নিয়ম, নাহলেই সর্বনাশ
একটি ভাইরাসের প্রধান কাজ হয় নিজেকে বিস্তার করা। যদি সে দেহকে শেষ করে দেয় তাহলে তার বিলুপ্তি ঘটবে। তবে এখানে সকলের থেকে আলাদা হয়েছে এই ভাইরাসটি। যে ঝিনুকে এটি প্রবেশ করেছে তাকে সে শেষ করেছে। পাশাপাশি শেষের একেবারে শেষ সময়ে সে অন্য একটি ঝিনুকের দেহে বাসা করছে। ফলে সেখান থেকে নিজের বংশকে অতি সহজেই বিস্তার করছে সে।
এই ভাইরাসটিকে বিশ্লেষণ করে গবেষকরা মনে করছেন এটি অনেকটা কোভিডের মতো। এর গতি, কাজ অনেকটা তেমনই। দ্রুত নিজের কাজ সেরে এটি অন্য দেহে ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদিও ঝিনুকের দেহে মেলা এই নতুন ভাইরাস নিয়ে এখনই চিন্তার কোনও কারণ নেই। তবে যেহেতু এটি জলে রয়েছে তাই সেখান থেকে এটি দ্রুত বাকি প্রাণীদের দেহে ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা রাখে।
বিশ্বের তথ্য থেকে দেখা যায় এই ধরণের ভাইরাস এর আগে ১৫ ধরণের আছে। তবে নতুন এই ভাইরাস যেভাবে দ্রুত বিস্তার করছে সেখান থেকে এটি ঝিনুকের দেহ থেকে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় নেবে না। সাধারণভাবে এই ভাইরাসগুলি দ্রুত একটি প্রাণীর দেহ থেকে অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। এটি যদি মানুষের দেহে প্রবেশ করে তাহলে সেখান থেকে কোন নতুন সমস্যা তৈরি হবে সেটিও গবেষকদের নজরে রয়েছে।

ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ঝিনুক চাষিরা প্রায়ই দেশীয় ও বিদেশি হ্যাচারিগুলো থেকে ছোট ঝিনুক, বা স্প্যাট, আমদানি করেন। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অজানা জীবাণু বা প্যাথোজেন ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকতে পারে।
ভাইরাস আবিষ্কারের ঘটনা চাষিদের জন্য একটি সতর্কবার্তা যেন তারা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে স্প্যাট পরিবহনের সময় অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করেন। কারণ এখনও আমরা ঝিনুকে রোগ কীভাবে ছড়ায় তা সম্পর্কে খুব বেশি জানি না। স্প্যাট আমদানির মাধ্যমে নতুন প্যাথোজেন প্রবেশ করতে পারে।
অবশেষে, সম্ভাব্য জীবাণু শনাক্ত করার জন্য দ্রুত পরীক্ষার ব্যবস্থা তৈরি করাই নিরাপদভাবে ঝিনুকের বীজ আমদানির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই গবেষণা আরও ভালো পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার পক্ষে সহায়ক। আগাম পরীক্ষা চালালে শিল্প খাতে অজানা ভাইরাসের বিস্তার রোধ করা সম্ভব হবে।
গবেষক দল জোর দিয়ে বলেছে, এই আবিষ্কার আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নয়। বরং এটি ঝিনুকের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা আরও তথ্যভিত্তিক করার সুযোগ এনে দেয়। আরও গবেষণার মাধ্যমে বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন ভাইরাসটির সুনির্দিষ্ট ভূমিকা জানা যাবে। এর লক্ষ্য হল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করা এবং বিশ্বব্যাপী নিরাপদ, সমৃদ্ধ ঝিনুক খামার নিশ্চিত করা।
