আজকাল ওয়েবডেস্ক: একটি ঘটনা বদলে দিল গোটা জীবন। জাপানের ৫৪ বছরের এক ব্যক্তি। তার নাম হিরোটাকা সাইতো। তিনি নিজের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলেন। বিক্রি করে দিলেন তার দামী গাড়ি। বদলে তিনি তৈরি করলেন কুকুরদের একটি থাকার জায়গা। তবে কেন এই ঘটনা। তার পোষা কুকুরটি তার প্রাণ বাঁচায়। এরপরই এই সিদ্ধান্ত নেয় এই ব্যক্তি।
এই ব্যক্তির কুকুদের জন্য যে থাকার জায়গা করেছেন সেখানে প্রায় ৪০০ টি কুকুর থাকে। কয়েক বছর আগে এই ব্যক্তি আর্থিক সমস্যাতে পড়েছিলেন। সেই সময় তিনি ভেবেছিলেন নিজের জীবনকে শেষ করে দেবেন। তবে তাকে সেদিন ঘর থেকে বাইরে যেতে দেয়নি তার কুকুর। একেবারে দরজা আগলে বসে ছিল সে। কোথাও যেন সে বুঝতে পেরেছিল তার মালিক আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে। এই কাজটি সে কিছুতেই তাকে করতে দেয়নি।
এরপরই ফের নিজের মানসিকতা পরিবর্তন করেন তিনি। সেখান থেকে নিজের বাকি সম্পত্তি দিয়ে তিনি আরও কুকুরকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। তাদেরকে যত্ন করে রেখে দিয়েছেন তিনি। তার কাছে কুকুররা শান্তিতে থাকে। তারা সকলেই তাকে ভালবাসে।

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশের নানা প্রান্ত, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বহু এলাকা। তবে এই ধ্বংসযজ্ঞের মাঝেও মানবতা ও প্রাণের মর্মান্তিক টান ছুঁয়ে গেল এক নিঃশব্দ নায়কের কাহিনি—এক কুকুর, যার তীক্ষ্ণ সজাগতা ৬৭ জন মানুষকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে এনেছে। গত ৩০ জুন রাত গভীর হওয়ার পর, মধ্যরাত থেকে ১টার মধ্যে হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলার ধরমপুর এলাকার সিয়াথি (Siyathi) গ্রামে ঘটে এই নাটকীয় ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা নরেন্দ্র ঘুমাচ্ছিলেন, হঠাৎ তাঁর কুকুরটির তীব্র ও অস্বাভাবিক চিৎকারে তিনি জেগে ওঠেন।
দ্বিতীয় তলায় ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা কুকুরটি হঠাৎ করেই তীব্র ভাবে ঘেউ ঘেউ করতে থাকে। নরেন্দ্র জানালার দিকে তাকিয়ে দেখেন, তাঁর বাড়ির দেওয়ালে বড় ফাটল ধরেছে এবং জল ঢুকতে শুরু করেছে। বিষয়টি বুঝেই নরেন্দ্র সঙ্গে সঙ্গে নিচে নেমে পরিবারের সদস্যদের জাগান এবং সঙ্গে কুকুরটিকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি। গ্রামে ছুটে গিয়ে প্রত্যেক ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে জাগাতে থাকেন এবং অনুরোধ করেন বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার জন্য। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিশাল ধস নামে সিয়াথি গ্রামে, গুঁড়িয়ে দেয় প্রায় ১২টি বাড়ি। এখন কেবল চার-পাঁচটি বাড়িই দৃশ্যমান, বাকিগুলো কাদামাটির নিচে চাপা পড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: প্রবীণ নাগরিকরা এখানে বিনিয়োগ করলেই পাবেন ৮ শতাংশের বেশি সুদ, দেখে নিন বিস্তারিত
নরেন্দ্রর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া এবং তাঁর কুকুরের সময়োপযোগী সংকেত ৬৭ জন মানুষকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করেছে। এই ধস ও বন্যা কেবল সিয়াথিতেই সীমাবদ্ধ নয়। হিমাচল প্রদেশ জুড়ে ২০ জুন থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণে প্রবল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্য জুড়ে ২২৫টি বাড়ি, ৭টি দোকান, ২৪৩টি গবাদিপশুর শেড, ৩১টি গাড়ি ও ১৪টি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মারা গেছে ২১৫টি গবাদিপশু এবং ৪৯৪ জন মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে।
