আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজা গিয়েছিলেন অর্থনৈতিক কথাবার্তা বলতে। কিন্তু আলোচনায় এল তাঁর বিলাসবহুল জীবন।  ইসোয়াতিনির রাজা তৃতীয় মসোয়াতি। ১৫ স্ত্রী। ৩০ সন্তান। নানা কাজের জন্য ১০০ লোক। তাঁরই একটি পুরনো ভিডিও আবার ব্যাপক ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আফ্রিকার ওই রাজা গিয়েছিলেন আবুধাবিতে। সেখানকার বিমানবন্দরের পুরনো এক ভিডিও নিয়ে এখন তুমুল চর্চা, কটাক্ষের বন্যা।  

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, রাজা ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে একটি ব্যক্তিগত জেট থেকে নামছেন। তার পিছনেই নামছেন একদল মহিলা। ক্লিপের উপরে লেখা আছে, "সোয়াজিল্যান্ডের রাজা ১৫ জন স্ত্রী এবং ১০০ জন ভৃত্য নিয়ে আবুধাবিতে এসেছিলেন। তাঁর পিতা, রাজা দ্বিতীয় সোভুজার, ১২৫ জন স্ত্রী ছিলেন।" ভাইরাল ফুটেজে, রাজা মসোয়াতিকে ঐতিহ্যবাহী চিতাবাঘের ছাপের পোশাক পরে থাকতে দেখা গিয়েছে, আর তাঁর স্ত্রীরা প্রাণবন্ত, রঙিন আফ্রিকান পোশাক পরেছিলেন।  যদিও একাধিক সূত্রের তথ্য, তাঁর স্ত্রীর সংখ্যা অন্তত ৩০। বর্তমানে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ১৫ জন। একাধিক সূত্রের খবর, তাঁর বাবার নাকি ১২৫জন স্ত্রী ছিলেন। যদিও আবার একাধিক সূত্রের তথ্য, ৩৫জন স্ত্রী ছিলেন তাঁর বাবার।

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, আবুধাবি সফরের সময় রাজা মসোয়াতি তৃতীয়ের সঙ্গে তাঁর ৩০ জন সন্তানও ছিলেন। বিশাল প্রতিনিধিদলটির জন্য নাকি সেই সময়ে বিমানবন্দরে সাময়িক বিঘ্ন ঘটে। যার ফলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা রাজকীয় দলের থাকার জন্য একাধিক টার্মিনাল বন্ধ করে দেন।

আরও পড়ুন: 'হ্যাপি ডিভোর্স', দুধ-স্নান করিয়ে ছেলেকে শুদ্ধ করলেন মা, চকোলেট কেক-এ যা লিখলেন, চোখ ছানাবড়া নেটিজেনদের...

ভিডিওটি  দেখে যেমন রাজার স্ত্রী-সন্তানের সংখ্যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তেমনই আলোচনা হয়েছে অন্য বিষয় নিয়েও। অনেকেই রাজা মসোয়াতি তৃতীয়ের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা এবং দেশের নাগরিকদের দৈনন্দিন সংগ্রামের মধ্যে স্পষ্ট বৈপরীত্য তুলে ধরেছেন। বহু মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। একজন লিখেছেন, 'এত কিছু করার পরেও তাঁর জনগণের কাছে বিদ্যুৎ নেই," আবার অন্য একজন প্রশ্ন করেছেন, 'এটি কি যথেষ্ট ধনী দেশ যে একটি ব্যক্তিগত জেট কিনতে পারবেন?' কেউ কেউ আরও তীব্র ভাষায় রাজার বাড়াবাড়ির নিন্দা করেছেন। একজন বলেছেন, 'এই ব্যক্তি ব্যক্তিগত জেটে ঘুরে বেড়ান, যখন তাঁর দেশের লোকেরা অনাহারে মারা যাচ্ছেন।' একজন ক্ষুব্ধ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লিখেছেন, তাঁর দেশের শিশুরা দু'বেলা দু'মুঠো খেতে পায় না, অথচ সেদিকে ভ্রূক্ষেপ নেই রাজার।

রাজা তৃতীয় মসোয়াতি ১৯৮৬ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার এই ছোট্ট দেশটিতে শাসন করছেন এবং একাধিক প্রতিবেদন অনুসারে, তার ব্যক্তিগত সম্পদ ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। তবে সেখানে সমস্যা বহু। তথ্য, ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা, সরকারি হাসপাতালে ওষুধের ঘাটতি এবং আর্থিকভাবে সংকটাপন্ন শিক্ষার্থীদের অনুদানের উপর নির্ভরশীলতার মুখোমুখি হচ্ছে। বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে যে ২০২১ সালে বেকারত্ব ২৩% থেকে বেড়ে ৩৩.৩% হয়েছে, যার ফলে মৌলিক পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে, সোয়াজিল্যান্ড নিউজের মতে, নির্মাণ, পর্যটন, কৃষি, টেলিযোগাযোগ এবং বনায়নের মতো বিভিন্ন কোম্পানিতে রাজার শেয়ার রয়েছে। তথ্য, সেখানকার ৬০ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে বাস করেন।  

 

জানা যায়, রাজার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরের লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা। তবে, তাঁর ব্যয়বহুল জীবনযাত্রাই বিশ্বব্যাপী দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।