আজকাল ওয়েবডেস্ক: আফগান ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের আবহ চলছে। কিছুদিন আগেই আফগানভূমে এয়ার স্ট্রাইক চালিয়েছিল পাকিস্তান। যার কড়া নিন্দা করা হয়েছিল। এমনকী পাক সেনাপ্রধান আসিফ মুনিরকে ‘দেখে’ নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল টিটিই কমান্ডাররা। এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে বৃহস্পতিবার শুরু হতে চলেছে দ্বিতীয় দফার শান্তি বৈঠক। তুরস্কের ইস্তানবুলে এই বৈঠক হবে। এদিকে এই বৈঠকের আগেই ফের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী খোয়াজা আসিফ।
বুধবার এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, যুদ্ধই কি তালিবানের সঙ্গে মোকাবিলা করার একমাত্র উপায়? উত্তরে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দেন, যুদ্ধ হবেই। তাঁর কথায়, ‘যদি আলোচনা ব্যর্থ হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। আমরা আমাদের পথে চলব। যেভাবে আমাদের নিশানা করা হচ্ছে, তাতে আমরাও হয়তো একই ভাবে উত্তর দেব।’ শুধু তা–ই নয়, কাবুলের বিরুদ্ধে জঙ্গিদের আশ্রয় দেওয়ার এবং সীমান্তে উত্তেজনা দেখেও চুপ থাকার অভিযোগ তুলেছেন আসিফ। যদিও এর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে আফগানিস্তান। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সাধারণ নাগরিকদের উপর ড্রোন হামলা চালানো এবং আইএস জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়ে নীরব থাকার পাল্টা অভিযোগও তুলেছে তালিবান সরকার।
প্রসঙ্গত, গত ৯ অক্টোবর থেকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্তে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে কাবুলে এয়ার স্ট্রাইক চালায় পাকিস্তান। পাল্টা সীমান্তে সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় আফগানরাও। দুই দেশের মধ্যে একাধিক বাণিজ্যপথ বন্ধ হয়ে যায়। এর মধ্যে তুরস্ক ও কাতারের মধ্যস্থতায় গত ২৫ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইস্তানবুলে প্রথম দফার পাক–আফগান বৈঠক চলেছে। মাঝে এক বার অবশ্য দু’পক্ষের মতবিরোধে আলোচনা ভেস্তে গিয়েছিল। শেষমেশ ৩০ তারিখ রাতে তুরস্ক বিবৃতি দিয়ে জানায়, দু’পক্ষই সংঘর্ষবিরতি বজায় রাখতে রাজি হয়েছে। আপাতত যুদ্ধবিরতি বজায় রাখা এবং সীমান্তে স্থিতিশীলতার জন্য একটি পর্যবেক্ষণ ও যাচাইয়ের ব্যবস্থা স্থির করা হয়েছে। কোনও পক্ষ শর্ত লঙ্ঘন করলে তাকে জরিমানা দিতে হবে।
তবে সংঘর্ষবিরতির শর্তাবলী ঠিক কীভাবে প্রয়োগ করা হবে, তা ঠিক করতে ফের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে কাবুল ও ইসলামাবাদের। বৃহস্পতিবার ইস্তানবুলে সেই বৈঠক হবে। সেখানে থাকবেন তালিবান সরকারের গোয়েন্দাপ্রধান আবদুল হক ওয়াসিক, ইসলামিক আমিরশাহির সদস্য আনাস হাক্কানি, কাতারে তালিবানের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত সুহেল শাহীন, উপ–স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রহমাতুল্লাহ নাজিব এবং বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আবদুল কাহার বলখি। পাক দলে থাকবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং আন্তঃবাহিনী গোয়েন্দাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ আসিম। এই বৈঠকের আগেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে দিলেন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী। যা নিয়ে বৈঠকে আফগানরা কড়া প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
