আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের মহাকাশ গবেষণার এক ঐতিহাসিক মুহূর্তে ভারতীয় বিমান বাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা অ্যাক্সিওম-৪ মিশনের অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পৌঁছেছেন। ২৫ জুন ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণের পর শুভ্রাংশু অন্যান্য নভোচারীদের সঙ্গে ড্রাগন মহাকাশযানে করে আইএসএসে পৌঁছনোর জন্য সাড়ে ২৮ ঘন্টা যাত্রা করেছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ভিডিও কলে কথাও বলেছিলেন। কিন্তু মহাকাশে তো কোনও নেটওয়ার্ক বা মোবাইল টাওয়ার থাকে না। তাহলে, মহাকাশচারীরা কীভাবে পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন?

আমরা সকলেই জানি, শব্দ একটি যান্ত্রিক তরঙ্গ যা নিজে থেকে ভ্রমণ করতে পারে না এবং এর জন্য বায়ু বা জলের মতো একটি মাধ্যমের প্রয়োজন হয়। মহাকাশে কোনও বায়ু নেই। ফলে প্রচলিত মাধ্যমে যোগাযোগ অসম্ভব। যেহেতু শব্দ তরঙ্গ ব্যবহার করা যায় না, তাই মহাকাশচারীরা পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য রেডিও তরঙ্গের উপর নির্ভর করেন। 

রেডিও তরঙ্গ এক ধরণের তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ। এই তরঙ্গগুলির ভ্রমণের জন্য বায়ু বা জলের মতো কোনও মাধ্যমের প্রয়োজন হয় না। মহাকাশচারীরা তাঁদের হেলমেটে লাগানো মাইক্রোফোন এবং ট্রান্সমিটার ব্যবহার করেন। যেগুলি তাঁদের কথাকে রেডিও সংকেতে রূপান্তরিত করে। এই সংকেতগুলি পরে স্যাটেলাইট অ্যান্টেনার মাধ্যমে পৃথিবীতে পাঠানো হয়। গ্রাউন্ড স্টেশনগুলি এই তরঙ্গগুলিকে আবার অডিওতে রূপান্তরিত করে।

নাসার স্পেস কমিউনিকেশনস অ্যান্ড নেভিগেশন (SCaN) সিস্টেম মহাকাশযানের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ বজায় রাখে। এই নেটওয়ার্কটি নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ নিশ্চিত করার জন্য বৃহৎ, কৌশলগতভাবে স্থাপন করা অ্যান্টেনা ব্যবহার করে। আইএসএস পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য রিলে স্যাটেলাইট ব্যবহার করে। এই স্যাটেলাইটগুলি পৃথিবীর উচ্চ কক্ষপথে ঘোরাফেরা করে এবং মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। মহাকাশচারীদের কাছ থেকে সংকেত গ্রহণ করে সেগুলিকে পৃথিবীর স্টেশনগুলিতে পাঠায়। ভয়েস বার্তা, ভিডিও কল বা ছবি যাই হোক না কেন, একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।