আজকাল ওয়েবডেস্ক: উরুগুয়ের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন গেরিলা নেতা ও দার্শনিক-চিন্তক হোসে "পেপে" মুজিকা প্রয়াত হলেন ৮৯ বছর বয়সে। বর্তমান রাষ্ট্রপতি ইয়ামান্দু অর্সি তাঁর মৃত্যু সংবাদ ঘোষণা করে মুজিকাকে “রাষ্ট্রপতি, কর্মী, পথপ্রদর্শক ও নেতা” বলে শ্রদ্ধা জানান।

২০২৪ সালের বসন্তে তাঁর খাদ্যনালীতে ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসায় কিছুটা সাড়া দিলেও ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ক্যান্সার লিভারে ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘদিনের অটোইমিউন রোগ এবং শারীরিক দুর্বলতার কারণে তিনি আর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে চাননি। “একজন যোদ্ধার বিশ্রাম নেওয়ার অধিকার আছে,” বলেছিলেন তিনি তাঁর শেষ সাক্ষাৎকারে।

২০১০-২০১৫ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকা মুজিকা উরুগুয়েকে রূপান্তরিত করেন একটি সমাজপ্রগতিশীল রাষ্ট্রে। তাঁর সময়েই বৈবাহিক সমতা, গর্ভপাত অধিকার ও গাঁজা বৈধতা আইন পাস হয়। তিনি রাষ্ট্রপতির প্রাসাদ ছেড়ে ছোট খামারে থাকতেন, আর বেতন দান করে দিতেন।

তাঁর জীবনের শুরুটা ছিল আরও নাটকীয়। ষাটের দশকে তিনি গঠন করেন মার্কসবাদী লেনিনবাদী সশস্ত্র গোষ্ঠী 'টুপামারোস'। যুদ্ধ, অপহরণ, জেল পালানো—সবই ছিল তাঁর জীবনের অংশ।

১৯৭৩ থেকে ১৯৮৫—পুরো স্বৈরাচারী আমলে কারাগারে বন্দি ছিলেন। পরে গণতন্ত্র ফেরার পর রাজনীতিতে সক্রিয় হন। মুজিকার জীবন ছিল এক জীবন-দর্শন। তাঁর নিজের কথায়: “জীবন এক অপূর্ব অভিযান। আমরা সম্পদের পেছনে দৌড়াচ্ছি, অথচ সুখকে ভুলে যাচ্ছি।” তিনি রেখে গেলেন তাঁর জীবনসঙ্গিনী, লুসিয়া তোপোলানস্কিকে। সন্তান ছিল না তাঁদের।

তাঁর প্রয়ানে লাতিন আমেরিকা তথা বিশ্ব এক ব্যতিক্রমী বিপ্লবী কণ্ঠ হারাল।