আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর সমর্থকরা প্রবল বিক্ষোভ শুরু করেছিলেন। দাবি একটাই, জেলবন্দি ইমরানের খানের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দিতে হবে। অবশেষে সেই অনুমতি মেলে। রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে গিয়ে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলেন তাঁর বোন উজমা খানুম। মঙ্গলবার দাদার সঙ্গে দেখা করিয়ে বেরিয়েই তাঁর দাবি, সুস্থই আছেন ইমরান! তবে, জেলের মধ্যে তাঁকে মানসিক নির্যাতন করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মারা গিয়েছেন, এই গুঞ্জনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাকিস্তান। তাঁর কোনও খোঁজ দিচ্ছে না শাহবাজ শরিফ সরকার ও রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারা কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ তুলেছিল পিটিআই এবং তাঁর পরিবার। এছাড়া পরিবারের কোনও সদস্যও ইমরানের সঙ্গে দীর্ঘদিন দেখা করতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে ইমরানের খোঁজ দেওয়ার দাবিতে তাঁর দল মঙ্গলবার রাওয়ালপিন্ডিতে বিক্ষোভের ডাক দেয়। বিক্ষোভ ঠেকাতে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি করে সব ধরনের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করে স্থানীয় প্রশাসন। তবুও বিক্ষোভ দমানো যায়নি। শেষমেশ অনুমতি দেওয়া হয়। বিকেলের দিকে (পাকিস্তান সময়) আদিয়ালা জেলে যান উজমা। ২০ মিনিট ছিলেন সেখানে।
উজমা বলেন, “ইমরান খান বলেছেন যে তাঁর কারও সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই, এমনকি তিনি কারও সঙ্গে দেখাও করেননি। তিনি বলেছেন যে তারা তাঁকে মানসিকভাবে নির্যাতন করছে। তিনি ক্রুদ্ধ এবং বলেছেন যে যা কিছু ঘটছে তার জন্য আসিম মুনির দায়ী।”
দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের মামলায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে আটক ইমরানকে কারাগারের ভিতরেই হত্যা করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর গত সপ্তাহ থেকে আদিয়ালা কারাগারের বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইমরানের পরিবারের সদস্যদের তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বাধা দেওয়ার পরেই এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পরিবার-পরিজনেরা ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ। গত ১৯ নভেম্বর রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তাঁর তিন বোন— আলিমা, উজমা এবং নুরা খান। প্রতিবাদে ধর্নায় বসলে তাঁদের শারীরিক হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার ক্রিকেটার প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রী সমর্থকরা ইসলামাবাদ এবং রাওয়ালপিন্ডিতে বিশাল বিক্ষোভের ডাক দেন যাতে কর্তৃপক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করা যায় ইমরানের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের অধিকার পুনরুদ্ধার করা হয়। শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার বৃহৎ সমাবেশ নিষিদ্ধ করে এবং রাওয়ালপিন্ডিকে দুর্গে পরিণত করার ফলে সংঘর্ষের আশঙ্কা তৈরি হয়।
আদিয়ালা কারাগারের আশেপাশের অঞ্চলে উচ্চ সতর্কতা জারি করার সময় এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এই অঞ্চলে আরও পাঁচটি চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। কারাগারের কাছে দাঙ্গা-বিরোধী সরঞ্জামে সজ্জিত ৭০০ জনেরও বেশি নিরাপত্তা কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছিল, যেখানে ইমরানের বোন এবং দলীয় কর্মীরা এক সপ্তাহ ধরে বিক্ষোভ এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
গুজবের মধ্যে, আদিয়ালা জেল প্রশাসন এবং সরকার দাবি করেছিল যে ইমরান সুস্থ আছেন এবং তিনি ‘সম্পূর্ণ চিকিৎসা সেবা’ পাচ্ছেন। আদিয়ালা জেল কর্তৃপক্ষ একটি বিবৃতিতে বলেছিল, “আদিয়ালা জেল থেকে তাঁর (ইমরান) স্থানান্তরের খবরের কোনও সত্যতা নেই। তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।”
