আজকাল ওয়েবডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বেশ কয়েকটি ছন্নছাড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে ভারতের ওপর তার শুল্প আরোপের দিকটি। মার্কিন বাজারে ভারতের বাসমতি চালের যে কদর রয়েছে তা বোধহয় বিশ্বের আর কোথাও নেই। সেদিক থেকে দেখতে হলে মার্কিন বাজারে বাসমতি চালের যে দাম বেড়েছে তাতে নাজেহাল সেখানকার বাসিন্দারাই।
২০১১ সালে একটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। নাম ছিল জিন্দগী না মিলেগি দোবারা। একই পরিস্থিতি এখন আমেরিকায়। তারা কীভাবে তাদের লাইফলাইন বাসমতি চাল খাবেন তা নিয়েই চিন্তায়। ভারতের বাজারে বাসমতি চালের অভাব নেই। তবে মার্কিন দেশে এই চাল উৎপাদন করার পরিবেশ নেই। ফলে সেখান থেকে তারা ভারতের দিকেও চোখ দিয়ে থাকেন। যে হারে শুল্ক বেড়েছে তাতে ভারতের কাছে অন্য দেশে বাসমতি চাল বিক্রি করা অতি সহজ। তবে আমেরিকার নাগরিকরা এত দাম দিয়ে চাল কিনতে পারছেন না।
এখানে আমেরিকা একটি বিকল্প পথের দিকে গিয়েছে। তারা বাসমতির বিকল্প হিসেবে টেক্সমতি নামে একটি চালের উৎপাদন শুরু করেছে। এটি মূলত টেক্সাসে চাষ করা হচ্ছে। এই হাইব্রিড চাল থেকে তারা বাসমতির চাহিদাকে পূরণ করার চেষ্টা করেছে। তবে কপাল খারাপ থাকলে যেটা হয় তা হল বাসমতির কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছে টেক্সমতি চাল। নিজের দেশে উৎপাদিত হওয়া এই চালের দিকে একেবারেই মুখ তুলে দেখতে নারাজ আমেরিকানরা। ফলে ট্রাম্পের এই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে।
ভারত থেকে প্রতি বছর আমেরিকায় প্রচুর বাসমতি চাল রপ্তানি করা হয়। তবে শুল্ক নীতির ফলে সেখানে সমস্যা তৈরি হয়েছে। ফলে ভারত বাসমতি চালের রপ্তানি আমেরিকা থেকে কমিয়ে বিশ্বের বাকি দেশগুলিতে করার দিকে ঝুঁকেছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা আমেরিকায় চাল রপ্তানি চিন্তা করতে রাজি নয়। তারা বিশ্বের বাকি দেশে যদি চাল পাঠাতে পারে তাহলে সেখান থেকেই লাভ আসবে। নিজের কৌশলে এবার নিজেই বিপদে পড়ে গিয়েছেন ট্রাম্প।
মার্কিন বাজারে এখনও দাপটের সঙ্গে বিক্রি হচ্ছে বাসমতি চাল। সেখানে আমেরিকানরা বেশি দাম দিয়েই কিনে নিয়েছেন বাসমতি চালকে। তবে টেক্সমতিকে তারা বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ভারতের পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা থেকে এই চাল মূলত উৎপাদিত হয়ে থাকে। এর দাম সাধারণ চালের থেকে বেশি হলেও স্বাদ একেবারে আলাদা হয়ে থাকে।
২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে বাসমতি চাল আমেরিকায় প্রায় ৮৮ শতাংশ ব্যবসা করেছে। সেখানে ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান মাত্র ৯ শতাংস বাসমতি চাল উৎপাদন করে থাকে। মার্কিন বাজারে ২০২৩ সালে ২ লাখ ৭০ হাজার মেট্রিক টন বাসমতি চাল আমেরিকায় রপ্তানি করেছে ভারত। এর থেকেই বোঝা যায় সেখানে বাসমতি চালের চাহিদা কতটা।
