আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাবা ভাঙ্গা অন্ধ বুলগেরিয়ান জ্যোতিষী তাঁর বিস্ময়কর কথার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনায়। তিনি নাকি ভবিষ্যতের নানা বিশ্বঘটনা আগে থেকেই দেখতে পেতেন। তাঁর অনুসারীরা দাবি করেন, ২০২৬ সাল নিয়ে বাবা ভাঙ্গার কথাগুলি বিশেষভাবে শিহরণ জাগানো।
বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা
বাবা ভাঙ্গার সবচেয়ে ভয়াবহ কথা হল ২০২৬ সালে এক মহাযুদ্ধ শুরু হবে, যা ছড়িয়ে পড়বে পূর্ব থেকে পশ্চিমে। তিনি নাকি বলেছিলেন, এই যুদ্ধে পশ্চিমা শক্তি ধ্বংস হবে এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন উদীয়মান বিশ্বশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবেন। তাঁকে বলা হবে “বিশ্বের প্রভু”।
আজকের পরিস্থিতিও অনেকের কাছে এই আশঙ্কাকে উসকে দিচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামছে না, ইজরায়েল নানা সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে, আর চীনের তাইওয়ান আক্রমণের সম্ভাবনা নিয়েও উত্তেজনা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পর্যন্ত ভারতকে শাস্তি দিয়ে রাশিয়াকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। অনুসারীদের দাবি, এই সব সংঘাত একত্রিত হয়ে ২০২৬ সালে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে।
আরও পড়ুন: আপনাকে কেন মশার দল ঘিরে ধরে? বদলাতে হবে এই অভ্যাসগুলি, তাহলেই কেল্লাফতে
ভিনগ্রহবাসীর আগমন
বাবা ভাঙ্গার আরেকটি আলোচিত কথা হল ভিনগ্রহবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ। তিনি নাকি বলেছেন, ২০২৬ সালের নভেম্বরে একটি বিশাল মহাকাশযান পৃথিবীতে অবতরণ করবে। এটিই হবে পৃথিবী ও ভিনগ্রহবাসীর মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ। যদিও এটি অনেকের কাছে কল্পনার মতো শোনায়, তাঁর সমর্থকরা মনে করেন ২০২৫ সালে এক বড় ক্রীড়া আসরে ভিনগ্রহবাসীর যোগাযোগের ইঙ্গিত মিলবে, আর ২০২৬ সালে ঘটবে প্রকৃত সাক্ষাৎ।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হানা
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০২৬ সালে ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কাও করেছেন বাবা ভাঙ্গা। তিনি নাকি বলেছিলেন, ভূপৃষ্ঠের ৭% থেকে ৮% অঞ্চল ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে একাধিক ইকোসিস্টেম ধ্বংস হয়ে যাবে, মানুষ ও প্রকৃতি চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তাঁর পূর্ববর্তী কিছু কথা, যেমন ২০২৪ সালের মার্চে মায়ানমারের ভূমিকম্প, সত্যি হওয়ায় অনুসারীরা এই সতর্কতাকেও গুরুত্ব দিচ্ছেন।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্থান
২০২৬ সালেই নাকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এমন এক স্তরে পৌঁছবে, যেখানে তা মানুষের ওপর নিয়ন্ত্রণ কায়েম করবে। বাবা ভাঙ্গা দাবি করেছিলেন, AI বহু চাকরি কেড়ে নেবে, মানুষের সম্পর্ককে প্রভাবিত করবে এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রা পর্যন্ত বদলে দেবে। ফরাসি জ্যোতিষী নস্ত্রাদামুসও ২০২৬ সালে প্রযুক্তির দখলদারির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন।
অবশ্যই এই কথাগুলি নিয়ে বিতর্ক আছে। বৈজ্ঞানিক মহল মনে করে এগুলি কেবল অনুমান, আর সমর্থকরা বলেন, ইতিহাসের নানা ঘটনাই নাকি আগে বাবা ভাঙ্গা বলেছিলেন। তাই ২০২৬ নিয়ে মানুষের মধ্যে কৌতূহল ও আতঙ্ক দুটোই রয়েছে। সব মিলিয়ে, বাবা ভাঙ্গার ২০২৬ সালের ভবিষ্যদ্বাণী যেন এক ভয়ের চিত্রপট—বিশ্বযুদ্ধ, ভিনগ্রহবাসীর আগমন, জলবায়ু বিপর্যয় ও প্রযুক্তির দখলদারি। তা সত্যি হোক বা কল্পনা, পৃথিবীকে প্রস্তুত থাকতে হবে এক অস্থির ভবিষ্যতের জন্য।
