আজকাল ওয়েবডেস্ক:‌ আমেরিকার সেনাবাহিনী শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করেছে যে তারা আর রূপান্তরকামীদের সেনাবাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেবে না, এমনকি চাকরিরত অবস্থায় রূপান্তরিত হওয়াও যাবে না। পরিষেবার অন্তর্ভুক্ত সদস্যদের জন্য লিঙ্গ পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত পদ্ধতিগুলির ব্যবহারও বন্ধ করা হল।

 পোস্টে বলা হয়েছে, ‘‌আমেরিকান সেনা আর রূপান্তরকামীদের সামরিক বাহিনীতে যোগদানের অনুমতি দেবে না এবং তাদের লিঙ্গ পরিবর্তন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনও চিকিৎসা করা বা পরিষেবা সরবরাহ করা বন্ধ করবে। আরও বিশদ বিবরণের জন্য অপেক্ষা করুন।’‌

বর্তমানে আমেরিকান সেনাবাহিনীতে রূপান্তরকামী রয়েছেন পনেরো হাজার। যদিও অন্য সূত্রের দাবি ১ হাজারেরও নিচে। তবে শেষপর্যন্ত সংখ্যাটা যাই হোক, তাঁদের অপসারণের কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মরত তাঁরা যথাযথ মর্যাদা ও সুযোগ সুবিধা পাবেন।

 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ২৭ জানুয়ারির এক নির্বাহী আদেশের পরেই এই ঘোষণা। সেই সময়েই পেন্টাগনকে ৩০ দিনের মধ্যে ট্রান্সজেন্ডার সদস্যদের জন্য একটি নীতি নির্ধারণ করার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। সেই নির্দেশ মেনেই এই নয়া সিদ্ধান্ত আমেরিকান সেনাবাহিনীর। প্রেসিডেন্টের আদেশে বলা হয়েছে, ‘‌যে কেউ তাদের জন্মগত লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকলে একজন সেনা হওয়ার জন্য কঠোর মান এবং প্রতিশ্রুতি পরিপূর্ণ করতে পারে না।’‌

 

প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ৭ ফেব্রুয়ারির একটি স্মারকে লিঙ্গ পরিচয় সংক্রান্ত বিষয় নির্ণয়ের সঙ্গে থাকা নতুন আবেদনকারীদের গ্রহণ করা এবং লিঙ্গসম্পর্কিত চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা স্থগিত করেছিলেন।

 

সেনাবাহিনীর এই ঘোষণাটি প্রেসিডেন্টের আরেকটি নির্বাহী আদেশের পরেই ঘোষণা করা হল, যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন শুধুমাত্র ‘‌দুটি লিঙ্গ, পুরুষ এবং নারী’‌কে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা বলে।

প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই ট্রাম্প পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন যে, আমেরিকায় এবার থেকে সরকারিভাবে দুটিই লিঙ্গ পরিচিতি থাকবেপুরুষ এবং স্ত্রী। এর বাইরে আর কোনও লিঙ্গ পরিচয়কে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না!

 

বৃহস্পতিবার ন্যাশনাল পার্ক সার্ভিস তাদের ওয়েবসাইট থেকেও ট্রান্সজেন্ডার এবং কুইয়ার মানুষদের উল্লেখ সরিয়ে ফেলেছে স্টোনওয়াল ন্যাশনাল মনুমেন্টের জন্য, যা নিউ ইয়র্কে অবস্থিত এবং আধুনিক আমেরিকান লিঙ্গ পরিচয় অধিকার আন্দোলনের পীঠস্থান হিসেবে স্বীকৃত।

ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই রূপান্তরকামীদের বিরুদ্ধে একের পর এক তির্যক প্রচার চালিয়েছেন ট্রাম্প। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই রূপান্তরকামীদের নিয়ে ট্রাম্পের একের পর এক নির্দেশকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।