আজকাল ওয়েবডেস্ক : ১৬ সাইকি আমাদের সৌরজগতের অন্যতম রহস্যময় বস্তু। এটি মঙ্গল এবং বৃহস্পতির মধ্যবর্তী অ্যাস্টেরয়েড বেল্টে অবস্থিত একটি বিশালাকার গ্রহাণু, যা তার ধাতব গঠনের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা মনে করেন এটি একটি প্রাচীন প্রোটোপ্ল্যানেটের উন্মুক্ত কেন্দ্র হতে পারে, যা গ্রহের অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে জানতে বিরল সুযোগ প্রদান করতে পারে।
১৮৫২ সালে ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আনিবালে দে গ্যাসপারিস এটি আবিষ্কার করেন এবং গ্রিক পুরাণের ‘সাইকি’ এর নামে নামকরণ করা হয়। এটি সাধারণ পাথুরে বা বরফের অ্যাস্টেরয়েডের মতো নয়, ১৬ সাইকি মূলত নিকেল এবং লোহার মতো ধাতু দিয়ে তৈরি।
গবেষকরা মনে করছেন, এতে সোনা এবং প্লাটিনামের মতো মূল্যবান ধাতুও থাকতে পারে। এর ব্যাস প্রায় ২২৬ কিলোমিটার, যা এটিকে অ্যাস্টেরয়েড বেল্টের অন্যতম বৃহৎ গ্রহাণু করে তুলেছে। এটি সূর্যকে প্রায় ৩৭০ মিলিয়ন কিলোমিটার দূর থেকে প্রদক্ষিণ করে।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এর ধাতব উপাদান যদি অনুমানের মতোই সমৃদ্ধ হয়, তবে এর মূল্য কয়েক কোয়াড্রিলিয়ন ডলার হতে পারে, যা ভবিষ্যতে মহাকাশ খননের জন্য আকর্ষণীয়। ধাতব প্রকৃতির কারণে এটি অন্যান্য পাথুরে বা বরফের অ্যাস্টেরয়েড থেকে একেবারেই আলাদা।
১৬ সাইকির এই রহস্য উন্মোচনের জন্য নাসা চালু করেছে পসাইকি মিশন। এটি শুরু হয়েছে ১৩ অক্টোবর, ২০২৩। কাজ শেষ হবে ২০২৯ সালে। ২১ মাস ধরে এটি ১৬ সাইকির চারপাশে ঘুরে এর পৃষ্ঠতল, গঠন, এবং চৌম্বক ক্ষেত্র অধ্যয়ন করবে।
১৬ সাইকি বিজ্ঞানীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এটি মহাকাশ খনন এবং এর অর্থনৈতিক দিক নিয়েও প্রশ্ন তুলছে । তবে বর্তমান প্রযুক্তি দিয়ে এত দূরের গ্রহাণু থেকে খনিজ আহরণ করা সম্ভব নয়। বর্তমানে, ১৬ সাইকি মহাকাশের এক রহস্যময় ধনভাণ্ডার হিসেবে রয়ে গেছে, যা আমাদের সৌরজগতের অতীত এবং ভবিষ্যৎ সম্পর্কে অনেক তথ্য ধারণ করে আছে।
