আজকাল ওয়েবডেস্ক: গোটা রাজ্যে স্কুলে বড়সড় বদল। শীঘ্রই রাজ্যের সব স্কুলে 'বন্দে মাতরম' গাওয়া বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দিলেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এবার সব স্কুলে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের গাইতেই হবে 'বন্দে মাতরম'। সোমবার এমন ঘোষণা করেছেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, সোমবার উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে 'একতা যাত্রা' কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এই ঘোষণা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে 'বন্দে মাতরম' গাওয়া বাধ্যতামূলক করলে দেশ ও ভারতমাতার প্রতি পড়ুয়াদের ও দেশবাসীর আবেগ আরও প্রাধান্য পাবে।
এদিন 'একতা যাত্রা'য় ভাষণ দেওয়ার সময়ে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, "জাতীয় স্তোত্র 'বন্দে মাতরম'-এর প্রতি সকল দেশবাসীর সম্মান প্রদর্শন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই উত্তরপ্রদেশের সমস্ত স্কুল এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে 'বন্দে মাতরম' গাওয়া বাধ্যতামূলক করতে চলেছি। দেশে নতুন জিন্না তৈরির ষড়যন্ত্র করছে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা। সেই ছক ভেস্তে দিতে হবে।'
১৮৭৫ সালে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় 'বন্দে মাতরম' লিখেছিলেন। গত শুক্রবার 'বন্দে মাতরম'-এর ১৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একগুচ্ছ পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর কথায়, বছরভর বন্দে মাতরমের সার্ধ শতবর্ষকে স্মরণ করে নানা অনুষ্ঠান উদযাপিত হবে। সেদিন 'বন্দে মাতরম'-এর স্মারক স্ট্যাম্প এবং কয়েন প্রকাশ করেছেন।
এই অনুষ্ঠানেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ফের সরব হন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, কংগ্রেস জমানায় 'বন্দে মাতরম'-এর গুরুত্বপূর্ণ কিছু স্তবক বাদ দেওয়া হয়েছিল। ১৯৩৭ সালে দেশভাগের বীজ বপন করেছিল কংগ্রেসের এই কাজ। কংগ্রেসকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আরও বলেন, 'দুর্ভাগ্য হল, ১৯৩৭ সালে 'বন্দে মাতরম'-এর গুরুত্বপূর্ণ স্তবক, যা গানটির প্রাণ, সেগুলো সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। 'বন্দে মাতরম'-এর ওই বিভাজন দেশভাগের বীজ বপন করেছিল। আজকের প্রজন্মের জানা উচিত, জাতি গঠনের এই ‘মহামন্ত্র’-এর সঙ্গে কেন এই অবিচার করা হয়েছিল। এই বিভাজনমূলক মানসিকতা এখনও দেশের জন্য চ্যালেঞ্জ।'
নরেন্দ্র মোদির এহেন বিতর্কিত মন্তব্যের পরেই কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে বিজেপি এবং আরএসএসকে কটাক্ষ করে বলেছেন, 'দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতীয় জনতা পার্টির কোনও ভূমিকা নেই। স্বাধীনতার ৫২ বছরে ওরা জাতীয় পতাকাও উত্তোলন করেনি। আর কংগ্রেসের যেকোনও ব্লকের মিটিংয়ে 'বন্দে মাতরম' গাওয়া হয়। ১৯৮৬ সাল থেকে আজ পর্যন্ত কংগ্রেসের প্রত্যেকটি বৈঠকে আমরা গর্বের সঙ্গে 'বন্দে মাতরম' গাই। এই গান আমাদের দেশমাতৃকার গান। মানুষের মধ্যে একতা এবং প্রত্যেক ভারতবাসীর প্রাণের গান 'বন্দে মাতরম'।
বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সিআর কেসবন এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে অভিযোগ করেন, 'কংগ্রেসের ফইজপুর অধিবেশনে 'বন্দে মাতরম'-এর কেবলমাত্র একটি অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। মা দুর্গাকে নিয়ে লেখা অংশগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল। কংগ্রেস ঐতিহাসিক পাপ করেছিল। এই গানকে ধর্মের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে জঘন্য অপরাধ করেছিল তারা।' 'বন্দে মাতরম' গাওয়াকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও কংগ্রেসের বাকযুদ্ধের মাঝেই সোমবার বিরাট ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এবার উত্তরপ্রদেশের সব স্কুলে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে এই গান।
