আজকাল ওয়েবডেস্ক: গোয়ালিয়রে এক অবিশ্বাস্য ঘটনা ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়র শহরে। চার বছরের দাম্পত্য জীবনের পর এক মহিলা জানতে পারেন, তাঁর স্বামী আসলে পুরুষ নন, বরং একজন হিজড়া। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, ওই মহিলার বিয়ে হয়েছিল ২০২০ সালে। ধুমধাম করে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়, এবং কনের পরিবারের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ, গৃহস্থালির সামগ্রীসহ মোটা অঙ্কের যৌতুকও দেওয়া হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য জীবনে অস্বাভাবিক কিছু বিষয় লক্ষ্য করতে শুরু করেন ওই মহিলা  চার বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁদের বিবাহিত জীবন সম্পূর্ণ হয়নি। স্ত্রী যখনই শারীরিক সম্পর্কে অনুরোধ করতেন, স্বামী নানা অজুহাত দেখিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যেতেন। কখনও বলতেন, তাঁর শারীরিক সমস্যা রয়েছে, কখনও বা চিকিৎসাধীন থাকার কথা জানাতেন।

ক্রমে স্বামী ও তাঁর পরিবারের ব্যবহারও বদলাতে থাকে। প্রায়ই সামান্য কারণেও ঝগড়া হতো। অনেক সময় তাঁকে খাবার না দিয়ে রাখা হতো, এমনকি শারীরিক নির্যাতনও করা হয় বলে অভিযোগ। একাধিকবার অসুস্থ হলে তাঁকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর স্বামীর পরিবার নতুন করে ২ লক্ষ টাকা ও একটি স্কুটার যৌতুক হিসেবে দাবি করে। সেই দাবি পূরণ না হওয়ায় তাঁকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়।

এরপর কিছুদিন আগে একদিন ওই মহিলা স্থানীয় বাজারে কেনাকাটা করতে যান। সেখানে হঠাৎই তিনি এমন এক দৃশ্য দেখেন যা তাঁকে হতবাক করে দেয়—স্বামীকে তিনি দেখেন শাড়ি, গয়না, চুড়ি ও মেকআপ পরে, একদল হিজড়ার সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং ভিক্ষা করছেন। হতবাক অবস্থায় তিনি স্বামীকে প্রশ্ন করলে, স্বামী জানান যে তিনি নাকি একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থায় কাজ করেন, যেখানে কখনও কখনও মহিলার পোশাক পরতে হয়।

কিন্তু ওই মহিলার সন্দেহ আরও গভীর হয়। তিনি সরাসরি গোয়ালিয়র মহিলা থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রথমিকভাবে এটি যৌতুকের দাবি, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি স্বামীর পরিচয় ও তাঁর কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে।

মহিলা থানার এক আধিকারিক জানান, “অভিযোগ অনুযায়ী, ভুক্তভোগী মহিলা দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি। প্রাথমিক তদন্তে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।”

স্থানীয় সমাজকর্মীরা জানিয়েছেন, ঘটনাটি শুধু প্রতারণার নয়, বরং নারী নির্যাতনের একটি ভয়ঙ্কর রূপও বটে। তাঁরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ও ন্যায্য বিচার দাবি করেছেন। বর্তমানে তদন্তাধীন এই মামলার পরবর্তী ধাপ কী হয়, তা নিয়ে গ্বালিয়রের বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহল দেখা দিয়েছে।