আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রায় এক সপ্তাহ ধরে চলা সীমান্ত সংঘাতের পরে ভারত ও পাকিস্তান সবধরনের সামরিক কর্মকাণ্ড—স্থল, জল ও আকাশপথে—বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার বিকেল ৫টা থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। তবে, সন্ধ্যার মধ্যেই পাকিস্তান চুক্তি ভেঙে গুলি চালায় বলে সূত্রের খবর।

এই সমঝোতা হয় দুই দেশের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের—ডিরেক্টর জেনারেলস অফ মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও)—মধ্যে ফোনালাপের মাধ্যমে। বিকেল ৩টা ৩৫ মিনিটে পাকিস্তানি ডিজিএমও যোগাযোগ করেন ভারতীয় ডিজিএমওর সঙ্গে, এবং কয়েক মিনিটের মধ্যেই যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ডিজিএমও কে এবং তাঁর কাজ কী?

ডিজিএমও হলেন এমন একজন উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তা যিনি মূলত অপারেশন ও যুদ্ধ পরিকল্পনার দায়িত্বে থাকেন। ভারতে সাধারণত একজন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এই পদে থাকেন। বর্তমানে ভারতের ডিজিএমও হলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই এবং পাকিস্তানের ডিজিএমও হলেন মেজর জেনারেল কাশিফ আব্দুল্লাহ।

এই কর্মকর্তারা কেবল যুদ্ধ ও অপারেশন পরিচালনার দায়িত্বই পালন করেন না, তাঁদের ভূমিকা সংকটকালে কূটনৈতিক স্তরেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। প্রতি সপ্তাহে নির্ধারিত হটলাইনের মাধ্যমে পাকিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন ভারতীয় ডিজিএমও, যাতে সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

কেন এত গুরুত্বপূর্ণ ডিজিএমও?

পহেলগাঁও হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে দ্রুত উত্তেজনা তৈরি হয়। এই অবস্থায় দুই দেশের ডিজিএমওর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বহুবার যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো, সেনা মোতায়েন বা গুলির উত্তর না দেওয়ার সিদ্ধান্ত—এইসব তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ডিজিএমওদের কাছেই থাকে।

এছাড়াও, ডিজিএমও নিয়মিতভাবে সেনাপ্রধান ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সঙ্গে পরিস্থিতি ভাগ করে নেন এবং প্রয়োজনে যুদ্ধস্তরের প্রস্তুতিও গ্রহণ করেন। এক কথায়, ডিজিএমও হলেন সেই 'নীরব কৌশলবিদ', যিনি যুদ্ধ না করেই যুদ্ধ থামাতে পারেন।

আগামী ১২ মে দুপুর ১২টায় ফের আলোচনায় বসছেন ভারত ও পাকিস্তানের ডিজিএমও। এই আলোচনাতেই স্থায়ী শান্তির ইঙ্গিত মিলতে পারে কি না, এখন সেদিকেই নজর কূটনৈতিক মহলের।