আজকাল ওয়েবডেস্ক: উৎসবের আবহে ফের ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। রেললাইন পেরোতে গিয়েই ঘটল বিপত্তি। ট্রেনের ধাক্কায় পরপর পুণ্যার্থীর মৃত্যু। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ট্রেনের ধাক্কায় ছ'জন পুণ্যার্থীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা রয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুর্ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মির্জাপুরের চুনার রেলস্টেশনে। কার্তিক পূর্ণিমা উপলক্ষে আজ সকালে গঙ্গাস্নানের পর চোপান থেকে বারাণসী যাচ্ছিলেন একদল পুণ্যার্থী। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কার্তিক পূর্ণিমা উপলক্ষে ভিড় জমেছিল পুণ্যার্থীদের। একটি ট্রেন থেকে নেমে আরেক প্ল্যাটফর্মে যাচ্ছিলেন পুণ্যার্থীরা। হেঁটেই রেললাইন পেরোনোর চেষ্টা করেন অনেকে। তখনই কালকা-হাওড়ামুখী নেতাজি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন একাধিক পুণ্যার্থী।
রেল সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনাটি ঘটেছে সকাল সাড়ে ন'টা নাগাদ। চোপান-প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস থেকে চুনার রেলস্টেশনে নেমেছিলেন পুণ্যার্থীরা। চুনার রেলস্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে নেমেছিলেন তাঁরা। কাছেই ছিল ওভারব্রিজ। কিন্তু খানিকটা হেঁটে সেই ওভারব্রিজে উঠে আর প্ল্যাটফর্ম বদল করেননি কয়েকজন পুণ্যার্থী। শর্টকাটে এক প্ল্যাটফর্ম থেকে আরেক প্ল্যাটফর্মে রেললাইন পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখনই দ্রত গতিতে কালকা-হাওড়া নেতাজি এক্সপ্রেস ছুটে আসে। হাওড়ামুখী নেতাজি এক্সপ্রেসের ধাক্কায় ছিটকে পড়েন পুণ্যার্থীরা।
দুর্ঘটনার পরেই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা। রেল দুর্ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। দুর্ঘটনার পর রেলস্টেশনেও হুলস্থুল শুরু হয়। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে রেল পুলিশ।
প্রসঙ্গত, গতকাল মঙ্গলবার ছত্তিশগড়ের বিলাসপুরে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সিগন্যাল ভেঙেই ছুটে যায় মেমু লোকাল ট্রেন। মালগাড়ির পিছনে ধাক্কা দিয়েই উঠে পড়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের প্রথম কামরা। ছত্তিশগড়ের বিলাসপুরে রেল দুর্ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২০ জন। যাদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
প্রাথমিক তদন্তের পর রেলের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সিগন্যাল ভেঙেই ছুটে যাচ্ছিল যাত্রীবাহী মেমু লোকাল ট্রেন। কোরবা এক্সপ্রেসটিই সিগন্যাল ভাঙে। এরপর আপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়ির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। সজোরে ধাক্কা দেওয়ার পরেই কোরবা এক্সপ্রেসের প্রথম কামরাটি মালগাড়ির পিছনের বগিতে উঠে যায়। কয়েকটি কামরা লাইনচ্যুত হয়েছে।
ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেও সাই মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনার পর শোকপ্রকাশ করেছেন। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। ভারতীয় রেলের তরফে নিহত ও আহতদের পরিবার পিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে। মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের পরিবার পিছু পাঁচ লক্ষ টাকা, অপেক্ষাকৃত কম আহতদের চিকিৎসার জন্য এক লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করা হয়েছে।
