আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে ফের এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা৷ প্রতাপগড় জেলার অন্তু থানা এলাকার সরায় কল্যাণদেব গ্রামে এক বৃদ্ধকে মারধর করা হয়েছে৷ এমনই একটি ভিডিও কিছুদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, একজন মহিলা একটি কাঁথায় শুয়ে থাকা বৃদ্ধকে বারবার আঘাত করছেন। এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ঘটনাটি নিয়ে চারিদিকে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধ ব্যক্তির নাম বিশ্বনাথ তিওয়ারি। তাঁর বয়স ৮৭ বছর। তিনি অবিবাহিত। খবর অনুযায়ী, বর্তমানে তিনি তাঁর ভাইয়ের ছেলে ও ভাতিজা ওমকারনাথ তিওয়ারির সঙ্গে বসবাস করেন। ওমকারনাথ একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং চাকরির কারণে উত্তরাখণ্ডে বসবাস করেন। তাঁর স্ত্রী সুনীতা তিওয়ারি তাঁদের সন্তানদের নিয়ে গ্রামেই থাকেন। একইসঙ্গে তিনি ওই বৃদ্ধের দেখভাল করেন।
শনিবার ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে৷ বৃদ্ধকে মারার এই ভিডিওটি নজরে আসার পর অন্তু থানার পুলিশ বিশ্বনাথ তিওয়ারির বাড়িতে যায়। সেখানে তারা বৃদ্ধ, তাঁর পুত্রবধূ সুনীতা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনন্দপাল ভদৌড়িয়া জানান, বিশ্বনাথ তিওয়ারির মানসিক অবস্থা সুস্থ নয়। তিনি স্মৃতিভ্রষ্ট এবং নানা সময়ে অপ্রাসঙ্গিক এবং অসংলগ্ন আচরণ করেন। তিনি আরও জানান, বৃদ্ধের দেখাশোনার দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে সুনীতার ওপর বর্তায়।
গ্রামবাসীরাও পুলিশের বক্তব্য সমর্থন করেছেন। তাঁদের মতে, সুনীতা দীর্ঘদিন ধরে একা বৃদ্ধের দেখাশোনা করে আসছেন। তাঁর স্বামী বাইরে চাকরি করেন বলে সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব তার কাঁধে। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ওই দিন সুনীতা হঠাৎ করে রেগে গিয়ে বৃদ্ধকে আঘাত করেন। পরবর্তীতে তিনি অনুতপ্ত হন। এমনকী পরবর্তীতে তিনি বৃদ্ধের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসীরা এটিকে একটি পারিবারিক অশান্তি এবং তীব্র মানসিক চাপের ফলাফল হিসেবে দেখছেন।
ঘটনার জেরে পুলিশ এই পুরো ঘটনার ভিডিও ও বক্তব্য রেকর্ড করে রেখেছে। এর ভিত্তিতে এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন সচেতন ভূমিকা রাখছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই এক রেস্তোরাঁয় প্রেমিকার সঙ্গে বসে খাওয়ার জেরে এক যুবকে প্রকাশে বেধড়ক মারধর, এমনকী জুতোপেটা করেন তাঁরই বাবা-মা। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশেই ঘটে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের কানপুরে। পুলিশ জানিয়েছে, কানপুরের রাম গোপাল এলাকায় পথের ধারে একটি রেস্তোরাঁয় বসে চাউমিন খাচ্ছিলেন ২১ বছরের তরুণ ও ১৯ বছরের তরুণী। সেই সময় তাঁদের একসঙ্গে দেখে ফেলেন তরুণের বাবা-মা। সঙ্গে সঙ্গে মারধর করতে তেড়ে আসেন।
আরও পড়ুনঃ 'আমি ক্রাইম পেট্রোল দেখি, অংশ হতে চাইনি', রোজকার মত মেট্রো চেপে বাড়ি ফিরছিলেন তরুণী, এরপর যা অভিজ্ঞতা হল, জানলে চমকে উঠবেন আপনিও ...
জনসমক্ষে যুগল শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। জানা গেছে, ভরা রাস্তার মধ্যে ছেলেকে কিল, চড়, ঘুষি, থাপ্পড় মারেন তাঁর বাবা। জুতোপেটাও করেন। অন্যদিকে তরুণীর চুলের মুঠি ধরে মারধর করেন তরুণের মা। দু'জনকে বাঁচাতে ছুটে এসেছিলেন কয়েকজন। এমনকী বাইকে করে পালিয়ে যেতেও সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, থানায় চারজনকেই নিয়ে এসে আলোচনা করা হয়েছিল। পরিবারের তরফে সাফ জানায়, তারা ছেলের এই সম্পর্ক আগেই মেনে নেয়নি। তারপরেও তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখায় রাগের মাথায় মারধর করে। অন্যদিকে বাবা-মায়ের আপত্তি সত্ত্বেও সম্পর্ক ভাঙতে রাজি নন তরুণ। গোটা ঘটনাটি ঘিরেই তদন্ত চলছে।
