আজকাল ওয়েবডেস্ক: জলপ্রপাতে ভেসে দুই ছাত্র নিখোঁজ। সূত্রে জানা গিয়েছে ভেলোর ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি (VIT), মধ্যপ্রদেশ-এর দুই ছাত্র রবিবার সন্ধ্যায় সেহোর জেলার একটি জলপ্রপাতে ভ্রমণে গিয়েছিলেন। এমন সময় হঠাৎ জলে পড়ে স্রোতে নিখোঁজ হয়ে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে সন্ধ্যা ৫ টার দিকে ভেরুখো জলপ্রপাতের কাছে। এই জলপ্রপাত দৌলতপুর গ্রামের সন্নিকটে বনাঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত। ইছাওয়াড় থানার অন্তর্গত এই জলপ্রপাতে দুই যুবকের এহেন পরিণতিতে চমকে উঠেছে গোটা দেশ৷
সেহোর জেলার পুলিশ সুপার দীপক শুক্লা সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, নিখোঁজ দুই ছাত্রের নাম হেমন্ত রাও এবং সিনমুক। উভয়েই হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা। তাঁরা ভেলোর ইন্সটিটিউট অফ টেকিনোলজির বর্তমান ছাত্র। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, তাঁরা তাঁদের তিন বন্ধুর সঙ্গে কোঠরি এলাকায় খেওনি অভয়ারণ্যে সম্প্রতি পিকনিকে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাঁরা প্রকৃতির শোভা অনুভব করার জন্য আশেপাশের সমস্ত এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকেন। এরপর তাঁরা আসেন জলপ্রপাতের কাছে৷ এমন সময়ে ওই জলপ্রপাতের পাশে একটি প্রবাহমান ঝর্নার জলে আচমকা পড়ে যান তাঁরা। মুহূর্তের মধ্যে স্রোতে ভেসে যান দুই যুবক। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাকি তিন যুবক আতঙ্কে তৎক্ষণাৎ পুলিশকে খবর দেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাকি তিন ছাত্রের পরিচয় তারা জেনেছে। গুজরাটের জামনগরের বাসিন্দা নরেন্দ্র এবং হায়দ্রাবাদের ভামসি ও ললিত। খবর মারফত তাঁরা কেউই সেদিন জলে নামেননি। খবর পাওয়ার পর পুলিশ তড়ঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু ততক্ষণে অন্ধকার নেমে যাওয়ায় রাতেই উদ্ধার কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি। সোমবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়েছে৷ পরদিন পুনরায় উদ্ধার অভিযান শুরু হয় বলে জানানো হয়েছে। এখনও ওই দুই যুবকের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছে পুলিশ৷

অন্যদিকে, একই দিনে আরেক ভিন্ন হাড়হিম ঘটনা। ওড়িশার সংবালপুর জেলার জুজুমারা এলাকায় অবস্থিত দেওঝরণ জলপ্রপাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, গোসল করতে গিয়ে ভেসে গিয়ে মৃত্যু হয় দুই ফাইনাল ইয়ার এমবিবিএস ছাত্র-ছাত্রীর। তাঁরা সকলেই ভীর সুরেন্দ্র সাই ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ (VIMSAR)-এর পড়ুয়া ছিলেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, ছয় জন ছাত্র ছাত্রী মিলে একটি পিকনিকে দেওঝরণ জলপ্রপাতে গিয়েছিলেন। সেখানে ছুটির দিনে জলপ্রপাত পরিদর্শণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা ঝর্ণার ওপরে উঠে যায়। এরপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে জলে তলিয়ে যায়। মৃতদের নাম মনিকা মীনা, যিনি রাজস্থানের বাসিন্দা। আরেকজন সন্দীপ পুরী, দিল্লি থেকে। খবর অনুযায়ী তাঁরা দুজনেই সাঁতার জানতেন না। জলপ্রপাতে স্নান করার সময় পা পিছলে গভীর জলে পড়ে যান। স্রোত প্রবল থাকায় মুহূর্তে ভেসে যান তাঁরা। ঘটনার জেরে মনিকা মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় পর্যটক এবং অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা দ্রুত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে উদ্ধারকারী বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তল্লাশি চালিয়ে জলপ্রপাত থেকে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রথমে মৃতদেহ দুটি জুজুমারা গ্রুপ হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরবর্তীতে ঘটনা কেন্দ্রিক যাবতীয় তদন্ত শুরু করেছে স্থানীয় পুলিশ।
