আজকাল ওয়েবডেস্ক: তেলেঙ্গানার হায়দরাবাদ শহরে চাঞ্চল্যকর একটি ঘটনা ঘটেছে। খবর অনুযায়ী, দীর্ঘ দিন ধরে পিঁপড়ে দেখলে প্রচণ্ড ভয় পেতেন ২৫ বছরের এক যুবতী। মাইর্মেকোফোবিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন ওই যুবতী। সেই ভয় আর সহ্য করতে না পেরে শাড়ি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, মণীষা নামে ওই যুবতী আমিনপুরের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি তাঁর স্বামী শ্রীকান্ত এবং তিন বছরের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন। পিঁপড়ে-ভীতির কারণেই তিনি বহু বছর ধরে খুব কষ্টে ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, মণীষা একটি সুইসাইড নোট লিখে গিয়েছেন। তাতে তিনি বলেছেন, এই সবসময় একই দুশ্চিন্তা নিয়ে তিনি আর বাঁচতে পারছেন না। পাশাপাশি তিনি তাঁর স্বামীকে অনুরোধ করেছেন, যেন তিনি তাঁদের মেয়ের ভালো করে যত্ন নেন।

খবর অনুযায়ী, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শ্রীকান্ত কাজ সেরে বাড়ি ফিরে দেখেন, দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। এরপর তিনি প্রতিবেশীদের ডেকে এনে দরজা ভাঙেন। জানা গিয়েছে, ঘরে ঢুকেই তাঁরা মণীষাকে শাড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় দেখতে পান। মেয়ের এহেন চরম পদক্ষেপের পর মণীষার বাবা-মা বুধবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ সেই ভিত্তিতে একটি মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে। বর্তমানে পুরো ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে৷ 

অন্যদিকে, সকালবেলা শরীরচর্চার ক্লাসে আসেনি কিশোর। এরপর শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। এরপর স্কুলের কাছেই মেলে মাত্র ১২ বছর বয়সি ওই কিশোরের মৃতদেহ৷ অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব সিয়াং জেলা সৈনিক স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ওই ছাত্রের দেহ ঘিরে সম্প্রতি চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। মর্মান্তিক এই ঘটনার পর তাঁর দিদি এক গুরুতর অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, মৃত্যুর আগের রাতে সিনিয়র ছাত্ররা মিলে তাঁর ভাই হারোকে মারাত্মকভাবে অত্যাচার করেছিল। এটিই তার মৃত্যুর কারণ।

স্কুল কর্তৃপক্ষ প্রথমে পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিল যে হারো আত্মহত্যা করেছে। কিন্তু হারোর দিদি তাডু লুনিয়া পরে ভাইয়ের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, এটি সাধারণ আত্মহত্যা নয়। এর নেপথ্যে রয়েছে ব়্যাগিং এবং লাগাতার শারীরিক নির্যাতন।

লুনিয়া ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিও প্রকাশ করে সবটা সামনে আনেন। তিনি জানান, হারোর ডর্মিটরির ছাত্ররা বলেছে যে গত ৩১ অক্টোবর রাতে ক্লাস ১০ এবং ক্লাস ৮-এর মোট এগারো জন সিনিয়র ছাত্র মিলে ক্লাস ৭-এর ডর্মিটরিতে ঢুকেছিল। তখন কোনও ওয়ার্ডেন সেখানে ছিলেন না।

অভিযোগ, ওই সিনিয়ররা অন্য ছাত্রদের কম্বল দিয়ে মুখ ঢেকে থাকতে বাধ্য করে। এরপর শুধু হারোকে ধরে ক্লাস ১০-এর ডর্মিটরিতে নিয়ে যায়। লুনিয়া কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, আমার ভাইকে সেদিন রাতে ঘুমোতে দেওয়া হয়নি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে। বন্ধ ঘরে কী ঘটেছিল, তা কেউ জানে না।"

ভাইকে হারানোর পর লুনিয়া রাজ্যের মানুষের কাছে ন্যায়বিচারের জন্য পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, "আজ আমি আমার ভাইকে হারালাম। এখন যদি আমরা এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে না দাঁড়াই, কাল হয়তো অন্য কারওর ক্ষেত্রেও এমন হতে পারে।"

বর্তমানে পুলিশ পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পাশপাশি আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত ওই আট জন নাবালক ছাত্রকে ইতিমধ্যেই আটক করে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করানো হয়েছে। আপাতত তাদের স্কুলের উপাচার্যের হেফাজতে রাখা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। এই ঘটনার নেপথ্যে তারা আরও তথ্যপ্রমাণ খুঁজছে।