আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতের আর কোনও রাজ্যে নেই, একমাত্র এই রাজ্যেই রয়েছে চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। জানেন কোন রাজ্য? কেরলে রয়েছে চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তিরুবনন্তপুরম, কোচি, কোঝিকোড় এবং কান্নুরে বিমানবন্দর রয়েছে। বিশ্বের নানা প্রান্তের সঙ্গে এই রাজ্যের সংযোগ তাই খুবই উন্নত। 

১. তিরুবনন্তপুরম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর- 
১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত, তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর কেরলের প্রাচীনতম এবং ঐতিহাসিক বিমানবন্দর। এটি সরকারি আধিকারিক, পর্যটক এবং বাসিন্দাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বার হিসেবে বিবেচিত। বিমানবন্দরটিতে রয়েছে ISRO এবং Technopark এর মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলি। ফলে এই বিমানবন্দর প্রশাসন এবং উদ্ভাবন উভয়ের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র করে তুলেছে।

২. কোচিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-
কোচিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশ্বব্যাপী মডেল। কারণ কোচিতে অবস্থিত, এই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কেরলের ব্যস্ততম বিমানবন্দর এবং বিশ্বের প্রথম সম্পূর্ণ সৌরশক্তিচালিত বিমানবন্দর। ১৯৯৯ সালে চালপ হওয়া কোচিন বিমানবন্দরটি কেরলের সঙ্গে বিশ্বের সংযোগকে দৃঢ় করেছে। এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণে যাত্রী এবং পণ্য পরিবহন পরিচালিত হয়। এর পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম পরিবেশের প্রতি কেরালার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে।

৩. কোঝিকোড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-
মালাবার অঞ্চলে পরিষেবা প্রদানকারী, কোঝিকোড় বিমানবন্দর কেরলকে মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সংযুক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উল্লেখ্য, কোঝিকোড়ে রাজ্যের প্রবাসী জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশের বসবাস। এই বিমানবন্দরের মাধ্যমে যাত্রী এবং পণ্যবাহী বিমান উভয়ই পরিচালিত হয়। তাই এই কোঝিকোড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আঞ্চলিক বাণিজ্য এবং গতিশীলতায় অবদান রাখে।

৪. কান্নুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-
২০১৮ সালে চালু হওয়া কান্নুর বিমানবন্দরটি কেরলের বিমান চলাচলের মানচিত্রে নতুন সংযোজন। এটি মূলত উত্তর জেলাগুলিকে পরিষেবা প্রদান করে থাকে। কান্নুর, কাসারগোড়, ওয়ানাড়ে দ্রুত এর নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করেছে, বিশেষ করে উপসাগরীয় এবং এশীয় গন্তব্যগুলিতে। এরই বিমানবন্জদরের সম্প্রসারণ বৃদ্ধি পর্যটন এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করেছে।

কেরলের জন্য চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কেন গুরুত্বপূর্ণ?

কেরলের বিমান চলাচলের সাফল্য তার অনন্য জনসংখ্যাতাত্ত্বিক এবং অর্থনৈতীর সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। কেরলে বিশাল প্রবাসীর বাস, বিশেষ করে উপসাগরীয় দেশগুলিতে, যার এই রাজ্য থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণের ক্রমাগত চাহিদা রয়েছে।

উপরন্তু, সমুদ্র সৈকত এবং ব্যাকওয়াটার থেকে শুরু করে আয়ুর্বেদ রিট্রিট, পাহাড়ি গন্তব্য এবং চিকিৎসা পর্যটন পর্যন্ত কেরলের বৈচিত্র্যময় পর্যটন কেন্দ্র শক্তিশালী বিমান যোগাযোগকে অপরিহার্য করে তোলে। চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উপস্থিতি নিশ্চিত করে যে, দক্ষিণ থেকে উত্তর পর্যন্ত প্রতিটি অঞ্চলে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণের সুযোগ রয়েছে, যা বাণিজ্য, পর্যটন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করে।

কেরলের বিমান চলাচলের মাইলফলক সম্পর্কে আকর্ষণীয় তথ্য:

- কোচিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হল বিশ্বের প্রথম সম্পূর্ণ সৌরশক্তিচালিত বিমানবন্দর।

- তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দর ভারতের প্রাচীনতম কার্যকর বিমানবন্দরগুলির মধ্যে একটি।

- কান্নুর বিমানবন্দরের উন্নয়ন জনসাধারণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছিল, অনাবাসী কেরলবাসীদের (এনআরকে) কাছ থেকে বড় বিনিয়োগ সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন পরিকাঠামোগত সাফল্যের একটি বিরল উদাহরণ।

কেরলের চারটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কেবল সংযোগ নয়, বরং সেই রাজ্যের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, বিশ্বব্যাপী সংযোগ বৃদ্ধির জন্য রাজ্যের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।  সবুজ বিমানবন্দরের (পরিবেশবান্ধব) পথিকৃৎ কেরল, এছাড়া এ রাজ্য থেকে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সমান প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা হয়। কেরল ভারতের বিমান চলাচল ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে, যা অন্যান্য রাজ্যের জন্য অনুসরণীয় উদাহরণ স্থাপন করেছে।