আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেম করে বিয়ে। সুখের সংসার টিকল না আট মাস! পণের দাবিতে নববধূর উপর নির্মম নির্যাতন। মারতে মারতেই নববধূকে মেরে ফেললেন স্বামী। ভয়াবহ ঘটনায় শিউরে উঠেছেন স্থানীয়রা। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে তেলেঙ্গানায়। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, ভিকারাবাদ জেলায় এই ঘটনাটি ঘটেছে। তুমুল অশান্তির মাঝেই ২২ বছর বয়সি তরুণীকে বেধড়ক মারধর করেন তাঁর স্বামী। গুরুতর আহত অবস্থায় সেই তরুণীর মৃত্যু হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজেও ধরা পড়েছে সেই নির্মম নির্যাতনের মুহূর্তটি। যা পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। 

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, মৃত তরুণীর নাম, অনুষা। আট মাস আগেই তাঁর প্রেমিক ২৮ বছরের পরমেশ কুমারের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। প্রেম করে বিয়ে হলেও, পণ নিয়ে তুমুল ঝামেলা হত তাঁদের মধ্যে। সেই পণ নিয়ে তুমুল অশান্তির পরেই বাবার বাড়িতে গিয়েছিলেন অনুষা। ঘটনার দু'দিন আগে বাবার বাড়িতে ফিরে যান। 

এরপর আবারও অনুষার রাগ ভাঙিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে আনেন পরমেশ। অনুষার পরিবারকে প্রতিশ্রুতি দেন, পণ নিয়ে আর ঝামেলা করবেন না। কিন্তু শ্বশুরবাড়িতে ফেরার পথেই আবারও দু'জনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। মাঝ রাস্তায় অনুষার পেটে লাথি মেরে, চড়, থাপ্পড় মারতে শুরু করেন পরমেশ। সেই সময় শক্ত লাঠি নিয়ে অনুষার মাথায় ছ'বার সজোরে আঘাত করেন। 

 

প্রতিবেশীরাও পরমেশকে আটকানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু সব চেষ্টাই বিফলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় অনুষাকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর পরমেশ ও তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে অনুষার পরিবার। দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার দাবি জানিয়েছেন তাঁর। 

 

প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসে পণের দাবিতে আরও এক ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল। পণের জন্য সদ্য বিবাহিত তরুণীর গলায় ফাঁস দিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থল বিহার। এবারেও পণ হিসেবে সোনার গয়নার দাবি করেছিল শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু খানিকটা সময় চেয়েছিলেন তরুণীর বাবা। অধৈর্য হয়ে তরুণীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল তাদের বিরুদ্ধে। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল বিহারের খাগাড়িয়া জেলার বরখান্দি তোলা গ্রামে। জানা গেছে, তরুণীর সঙ্গে বিভীষণ যাদবের বিয়ে হয়েছিল এক বছর আগে। তরুণীর বাবা জাদো যাদব জানিয়েছেন, বিয়ের পর থেকেই স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পণের জন্য হেনস্থা করতেন তরুণীকে। আরও সোনার গয়নার দাবি করতেন তাঁরা। এদিকে তরুণীর বাবা আশ্বাস দেন, আর দুই মাস পরেই তিনি সব দাবি পূরণ করবেন। 

 

কাঁদতে কাঁদতেই জাদো যাদব জানান, 'আমি শুধুমাত্র দুই মাস সময় চেয়েছিলাম!' আরেক আত্মীয় জানান, সোনার গয়না না পেলে তরুণীকে খুনের হুমকিও দিয়েছিল তারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, আগে বিভীষণ চাষবাসের কাজ করতেন। কিন্তু গত মাস ধরেই বিহারেই গাঁজা ও বিষমদ বিক্রি করতেন। তরুণীর ভাইয়ের অভিযোগ, প্রথমে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। এরপর তাঁর দেহটি ঝুলিয়ে দেন। তরুণীর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন ছিল। 

 

তরুণীর বাবা জানিয়েছিলেন, 'আমার যা সার্মথ্য ছিল, সবকিছুই দিয়েছিলাম। তাও সোনার হার আর গাড়ির দাবি করছিল মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। সদ্য ছেলের বিয়ে দিয়েছি। ছেলের বিয়ের সময় থেকেই সোনার হারের দাবিদাওয়া শুরু হয়। দুই মাস সময় চেয়েছিলাম। তার মধ্যেই মেয়েকে খুন করে দিল।' তরুণীর দেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল পুলিশ। অভিযুক্তরা সকলেই পলাতক।