আজকাল ওয়েবডেস্ক:  ভারতের একাধিক রাজ্যে ক্রমশই বাড়ছে পড়ুয়া আত্মহত্যার প্রবণতা। সম্প্রতি এমনই উদ্বেগজনক তথ্য পেশ করেছে একটি গবেষণার রিপোর্ট। দেশের প্রতিটি রাজ্যে পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়।

 

রিপোর্ট বলছে, পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যার হার সবথেকে বেশি মহারাষ্ট্রে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু ও মধ্যপ্রদেশ। এই তালিকায় দশের মধ্যে নাম রয়েছে রাজস্থানেরও। গত ২০ বছরে দেশে পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ।

 

সামগ্রিক আত্মহত্যার হার বার্ষিক ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে, ছাত্রদের আত্মহত্যার হার বেড়েছে ৪ শতাংশ। রিপোর্ট অনুযায়ী, আত্মঘাতী পড়ুয়ার ৫৩ শতাংশই ছিল পুরুষ। আর ছাত্র আত্মহত্যার সংখ্যা ৬ হাজার ৬৫৪ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৪৪। 

কিন্তু কী কারণে এইভাবে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছেন ছাত্রছাত্রীরা? বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার পথ? বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, পড়ুয়াদের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ মানসিক অবসাদ।

 

স্কুল-কলেজে রেজাল্ট আশানরূপ করতে না পারার চাপ, বাবা-মার চাপে নিজের পছন্দমতো বিষয় নিয়ে পড়তে না পারা, উচ্চশিক্ষা নিতে গিয়ে আর্থিক প্রতিকূলতা, প্রতিষ্ঠানে র‍্যাগিংয়ের শিকার, কাঙ্খিত লক্ষ্য ছুঁতে না পারা, ব্রেকআপ, একাকীত্ব প্রভৃতি নানা কারণে হতাশা বা অবসাদগ্রস্ত হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা। ভারতে বছর বছর আত্মহত্যার ঘটনা এতটাই বাড়ছে, যে তা ছাপিয়ে যাচ্ছে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারকেও।

 

আত্মহত্যার এই প্রবণতাকে কমিয়ে আনতে সহায়ক হতে পারে সহিষ্ণু সমাজ। এমনটাই মনে করছেন মনোবিদরা। সেইকারণেই সন্তানদের সঙ্গে বাবা-মাকে খোলা মনে মিশতে এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

পাশাপাশি সন্তানদের যেকোনও সমস্যা মনোযোগ দিয়ে শোনার পাশাপাশি তাদের পর্যপ্ত সময় দেওয়ার বিষয়গুলিতেও জোর দিচ্ছেন তারা। একইসঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি সহ র‍্যাগিং নিষিদ্ধ করতেও একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলেও মনে করছেন তাঁরা।