আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারে আসন্ন নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকায় ‘বিশেষ তীব্র সংশোধন’ (Special Intensive Revision) চালু করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। ২০০৩ সালের আগে ভোটার তালিকাভুক্ত নাগরিকদের নাগরিক হিসেবে ধরা হলেও, তার পরে নাম তোলা নাগরিকদের এবার প্রমাণ দিতে হবে তাঁদের জন্মস্থান ও পিতামাতার নাগরিকত্ব।

২৪ জুন ঘোষণা, ২৫ জুন থেকে শুরু হওয়া এই হাউজ-টু-হাউজ যাচাই চলবে ২৬ জুলাই পর্যন্ত। ১ আগস্ট খসড়া তালিকা প্রকাশ ও ৩০ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে। এই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, “অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নাম তালিকাভুক্ত হওয়ায় এই সংশোধন প্রয়োজন হয়েছে।” ফলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, এনআরসি-র ছদ্মবেশে এই উদ্যোগ, যা বহু গরিব, অশিক্ষিত বা পরিযায়ী শ্রমিকের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নিতে পারে।

রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিবাদ। তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে মহাজোটের পক্ষ থেকে একে "গরিবদের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার চক্রান্ত" বলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “এনআরসি-র থেকেও ভয়ঙ্কর” এই পদক্ষেপ, যার আসল নিশানা বাংলার গ্রামীণ ভোটার।

নাগরিক অধিকার আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, জন্মতারিখের সঙ্গে পিতামাতার কাগজপত্র চাওয়া একটি ‘বর্জনমূলক’ প্রক্রিয়া, যা গরিব ও প্রান্তিক শ্রেণিকে ভোটতালিকা থেকে বাদ দিতে পারে। তবে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এন. গোপালস্বামী বলছেন, “এই সংশোধন জরুরি এবং কারও বাদ পড়ার আশঙ্কা অমূলক।”

বিহারের প্রায় ৮ কোটি ভোটারের মধ্যে ক’জন সময়মতো কাগজ দিতে পারবেন? এনআরসি ঘিরে অসমে ১৯ লক্ষ মানুষের বাদ পড়ার দৃষ্টান্তই কি এবার বিহারে বা বাংলায় ফিরছে? এই প্রশ্নে আজ সারা দেশে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।