আজকাল ওয়েবডেস্ক: বহুদিন থেকেই তৈরি হয়েছিল জল্পনা। সেইমতো শুরু হয়েছিল নানা রাজনৈতিক তরজাও। তবে এবার সেই সময়ের অবসান হল। দেশজু়ডে সমস্ত রাজ্যেই হবে এসআইআর। প্রতিটি রাজ্যকে এবিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন।


ইতিমধ্যেই এবিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ জারি করা হয়েছে। আগামী বছরেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের জেরে ফের একবার উত্তপ্ত হতে পারে রাজ্য রাজনীতি। একদিকে যেমন বিজেপি আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছিল রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে এসআইআর হবেই। তেমনই এর বিরোধিতায় সরব ছিল রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি দিল্লিতে এসআইরকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের কথায় কাজ করছে। এসআইআর নিয়ে ইতিমধ্যে সংসদে সরব হয়েছিলেন বিভিন্ন বিরোধী দলগুলিও।


প্রায় দুই দশক পর পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা করার প্রস্তুতি এবার পুরোদমে নেওয়া হবে। সোমবার রাজ্যের ২০০২ সালের ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর। ইতিমধ্যেই বাংলার ১১টি জেলার শতাধিক বিধানসভা কেন্দ্রের পুরনো তালিকা আপলোড করা হয়েছে সিইও-র ওয়েবসাইটে।


কমিশন সূত্রের খবর, ২০০২ সালের এই তালিকাকে ভিত্তি করেই রাজ্যে নতুন করে ভোটার যাচাই প্রক্রিয়া চালানো হবে। বিহারে ২০০৩ সালে যে ভাবে এসআইআর হয়েছিল এবং বর্তমানে যেভাবে ওই রাজ্যে পুনরায় ভোটার যাচাই হচ্ছে, প্রায় সেই একই মডেলে পশ্চিমবঙ্গেও কাজ শুরু হচ্ছে বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশনের অন্দরের একাংশ। 


কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ভোটার তালিকার যাচাইয়ের জন্য মাঠে নামবেন জেলা নির্বাচনী আধিকারিক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসার, অতিরিক্ত ইআরও এবং বুথ লেভেল অফিসারেরা । তাঁরা প্রত্যেক ভোটারের বাড়িতে গিয়ে ফর্ম পূরণ করিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবেন। তার পর নথি যাচাই করে তৈরি হবে সংশোধিত ভোটার তালিকা।


এই প্রক্রিয়ায় কিছু ক্ষেত্রে নথির প্রয়োজনীয়তা কম থাকবে। যেমন, যাঁদের নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল, তাঁদের অতিরিক্ত কোনও কাগজ দেখাতে হবে না। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে তাঁদের সন্তানদের ক্ষেত্রেও, যদি অভিভাবকের নাম ওই তালিকায় থেকে থাকে। তবে নতুন ভোটার, অন্য রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তি অথবা যাঁদের নাম সেই পুরনো তালিকায় নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে বাড়তি নথি ও আলাদা ফর্ম জমা দিতে হবে। এই যাচাইয়ের মধ্যে থাকবে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত তথ্যও।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানে তৈরি হল রহস্যময় বিমানবন্দর, কারা রয়েছে এর নেপথ্যে


এবার থেকে এই প্রক্রিয়া অনলাইনেও সম্পন্ন করা যাবে। প্রতিটি বুথে সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিরাও উপস্থিত থাকবেন বলে কমিশন সূত্রের খবর।


প্রসঙ্গত, বিহারে ইতিমধ্যেই জুন মাস থেকে চলছে এসআইআর প্রক্রিয়া। ১ অগস্ট প্রকাশিত হবে সেই রাজ্যের প্রাথমিক তালিকা। জানা গেছে, সেখানে এখনও পর্যন্ত ৬০ লক্ষেরও বেশি ভোটার নাম বাদ গিয়েছে। বাংলাতেও ঠিক কত পরিমাণ নাম বাদ পড়বে, তা এখনই বলা না গেলেও কমিশনের এই পদক্ষেপ ঘিরে প্রশাসনিক মহলে শুরু হয়েছে তৎপরতা।