আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সে কর্মী সংকট নিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার নিচ্ছে। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) পরপর দ্বিতীয় দিনের মতো সংস্থা ২০০-র বেশি ফ্লাইট বাতিল করেছে এবং আরও বেশ কয়েকটি ফ্লাইট দেরিতে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। প্রতিদিন ২,২০০-র বেশি ফ্লাইট পরিচালনাকারী ইন্ডিগোর এই হঠাৎ বিশৃঙ্খলায় যাত্রীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
সিভিল এভিয়েশন মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) সময়ানুবর্তিতায় ইন্ডিগোর স্কোর ছিল মাত্র ৩৫ শতাংশ, যা সমস্ত বড় এয়ারলাইন্সের মধ্যে সর্বনিম্ন। একইদিন DGCA জানিয়েছে, নভেম্বর মাসে এখন পর্যন্ত ইন্ডিগো মোট ১,২৩২টি ফ্লাইট বাতিল করেছে, যার মধ্যে ৭৫৫টি বাতিল হয়েছে পাইলট ও ক্রু ঘাটতি এবং সংশোধিত Flight Duty Time Limitation (FDTL) নীতির কারণে।
সূত্রের দাবি, ইন্ডিগোর কর্মীদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ সম্প্রতি দুবাই-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা এমিরেটসের নিয়োগ প্রচারে অংশ নিচ্ছেন। দিল্লি এবং মুম্বইয়ে হওয়া এই নিয়োগ মেলায় পাইলট, কেবিন ক্রু এবং অভিজ্ঞ কর্মীদের আকৃষ্ট করতে বিশেষ আর্থিক প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। ফলে বহু কর্মী ইন্ডিগো ছেড়ে এমিরেটসে যোগদানের আবেদন করছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।
ইন্ডিগো অবশ্য দাবি করেছে, পরিষেবার বিঘ্ন "অনাকাঙ্ক্ষিত অপারেশনাল সমস্যার কারণে হয়েছে"। কিন্তু অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, সমস্যা শুধু কর্মী সংকট নয়, বরং পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতাও এর অন্যতম মূল কারণ। এক কর্মী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন—“নতুন FDTL নীতি তো সব এয়ারলাইন্সের ক্ষেত্রেই কার্যকর হয়েছে। তাহলে কেন শুধু ইন্ডিগো এত সমস্যায় পড়ছে? কারণ সময়মতো পরিকল্পনা এবং স্টাফ ম্যানেজমেন্টে ভুল হয়েছে।”
দিল্লির বিমানবন্দরে বুধবার ৬৭টি, মুম্বই ও বেঙ্গালুরু মিলিয়ে ৭০টিরও বেশি, হায়দরাবাদে ১৩টি এবং কলকাতা–শ্রীনগরসহ বিভিন্ন রুটে আরও বেশ কয়েকটি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। বিমানবন্দরে আটকে পড়া বহু যাত্রী অভিযোগ করেছেন, তাদের আগেভাগে জানানো হয়নি এবং বিকল্প ফ্লাইট বা রিফান্ড সংক্রান্ত তথ্য সময়মতো পাওয়া যায়নি।
DGCA ইতিমধ্যে সংস্থার কাছ থেকে পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার বিষয়ে রিপোর্ট চেয়েছে। প্রয়োজনে সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সূত্রের দাবি।
ইন্ডিগো দেশে সর্বাধিক যাত্রী পরিবহণকারী বিমান সংস্থা হওয়ায় এই পরিস্থিতি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিমান পরিষেবা দুর্ভোগকে আরও বাড়াতে পারে। যাত্রীরা আশা করছেন, সংস্থা দ্রুত সমস্যার সমাধান করে স্বাভাবিক পরিষেবা ফিরিয়ে আনবে। তবে এখনই বলা যাচ্ছে না, কর্মী সংকট এবং আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থার আগ্রাসী নিয়োগের মুখে ইন্ডিগো কত দ্রুত পরিস্থিতি সামলাতে পারবে।
