আজকাল ওয়েবডেস্ক: গভীর রাতে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা পাঞ্জাবে। একটি গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ট্যাঙ্কারের। তারপরেই ওই গ্যাস সিলিন্ডারের ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ ঘটে। দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকেই।‌ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার আশঙ্কা রয়েছে। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে পাঞ্জাবের হোশিয়ারপুর জেলার মান্দিয়ালা আদ্দায়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হোশিয়ারপুর- জলন্ধর সড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলেই সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে ট্যাঙ্কারের চালক রয়েছেন। অমৃতসরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। 

 

বিস্ফোরণের জেরে অনেকেই আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে ১৫ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকজনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। হোশিয়ারপুরের পুলিশ আধিকারিক মুকেশ কুমার জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার ইতিমধ্যেই মামলা রুজু করা হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১০৫ এবং ৩২৪(৪) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। 

 

এই দুর্ঘটনার পরেই পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান শোকপ্রকাশ করেছেন। নিহত ও আহতদের পরিবার পিছু আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি। মৃতদের পরিবার পিছু দুই লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

 

আরও পড়ুন: ট্রেনের শৌচালয়ের ডাস্টবিনে ও কী! পরিষ্কার করতে গিয়ে আঁতকে উঠলেন সাফাইকর্মীরা, স্টেশন জুড়ে তুমুল শোরগোল

 

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, রাম নগর নেহা লিং রোডের দিকে যাচ্ছিল এলপিজি ট্যাঙ্কারটি। তখনই একটি পিক আপ ভ্যানের সঙ্গে এর সংঘর্ষ হয়। বিস্ফোরণ ঘটে সঙ্গে সঙ্গে। বিস্ফোরণের ফলে গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি ও দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। ঝলসে যান বাড়িতে থাকা কয়েকজন সদস্য। এক স্থানীয় ব্যক্তি জানিয়েছেন, 'সেই সময় আমরা ঘরেই ছিলাম। আমি স্নানঘরে ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। কয়েক মিনিটের মধ্যে আমাদের বাড়িতেও আগুন ছড়ায়। আমি, আমার স্ত্রী, মেয়ে ও পুত্রবধূ আহত হয়েছি। কোনও মতে নাতিকে কম্বলে মুড়ে রক্ষা করতে পেরেছি।' 

 

বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। আগুন নেভানোর জন্য রাতেই হোশিয়ারপুর, দাশুয়া এবং তালওয়ারা থেকেও দমকলের একাধিক ইঞ্জিন পৌঁছয়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে হোশিয়ারপুর-জলন্ধর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুর্ঘটনাস্থলের আশেপাশের এক কিলোমিটার এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। 

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, বিস্ফোরণের স্থান থেকে ৫০০ মিটার দূরেই গ্যাসের প্ল্যান্ট রয়েছে। কিন্তু আগুন প্ল্যান্ট পর্যন্ত ছড়াতে পারেনি। সেখানে আগুন ছড়ালে আরও ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটতে পারত। ভয়াবহ এই আগুনে এলাকার কমপক্ষে ১৫টি দোকান এবং ৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান পাঞ্জাবের ক্যাবিনেট মন্ত্রী রবজোত সিং। 

 

এদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঘটনার পরে ৩০ জন ঝলসে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অনেকেই প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছাড়া পান। যাঁরা বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁদের ৩০ থেকে ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন অনেকেই। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ঘটনাটি ঘিরে এখনও উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে তারা।