আজকাল ওয়েবডেস্ক: টানা কয়েক মাসের অবনতির ধারায় থাকা ভারতীয় টাকা (INR) শুক্রবার (২১ নভেম্বর) ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে গেল। ডলারের বিপরীতে টাকার মান এক ঝটকায় কমে দাঁড়ায় ₹৮৯.৬৬৫০, যা আগের দিনের ক্লোজিং রেট ₹৮৮.৬৮৫০-এর তুলনায় ৯৮ পয়সা বেশি পতন। গত তিন মাসে এটিই টাকার এক দিনের সবচেয়ে বড় ধস বলে জানিয়েছে দ্য হিন্দু।
ফরেক্স বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষয় ও দেশীয় শেয়ারবাজারে নেতিবাচক সংকেত, বাণিজ্য-সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা এবং ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ থেকে ব্যাপক মূলধন বেরিয়ে যাওয়ার প্রবণতা টাকার ওপর বড় চাপ সৃষ্টি করেছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি ও এআই-নির্ভর টেক স্টকে রাতারাতি বড় ধস নামায় আন্তর্জাতিক “রিস্ক-অফ” মনোভাব তীব্র হয়েছে। এর প্রভাব পড়ে উদীয়মান বাজারগুলোর মুদ্রায়—ভারতীয় টাকাও তার ব্যতিক্রম নয়।
রিসার্চ প্রধান অনিন্দ্য ব্যানার্জি দ্য হিন্দু–কে বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদ বিক্রি এবং হঠাৎ ঝুঁকি-লেনদেন কমিয়ে দেওয়ায় উদীয়মান বাজারের মুদ্রাগুলোর ওপর চাপ বেড়েছে। ভারতীয় টাকার পতন তারই প্রতিফলন।”
এদিকে, বিশেষজ্ঞ পারমার বলেন যে US–India বাণিজ্যচুক্তির বিলম্ব, রিজার্ভ ব্যাংকের অনুপস্থিত হস্তক্ষেপ এবং শর্ট কাভারিং–এর কারণে USD–INR বিনিময় হারে হঠাৎ এই তীব্র উল্লম্ফন দেখা গেছে।
রয়টার্স–কে দেওয়া সিটি ব্যাংকের অর্থনীতিবিদদের নোটে বলা হয়েছে, “দ্রুত বাণিজ্যচুক্তি না হলে ভারতের রপ্তানি অর্ডার পুনরুদ্ধার ব্যাহত হতে পারে। বর্তমানে PMI ডেটা অনুযায়ী জানুয়ারি–জুলাই সময়ের তুলনায় রপ্তানি চাহিদা এখনো দুর্বল।”
রয়টার্স আরও জানিয়েছে, গত আগস্টের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ভারতীয় আমদানির ওপর ৫০% ট্যারিফ কার্যকর হওয়ার পর থেকে রুপি তিন মাস ধরে চাপের মুখে রয়েছে এবং ধারাবাহিকভাবে দুর্বল হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিস্থিতি দ্রুত না বদলালে রুপির ওপর চাপ আরও বাড়তে পারে, আর সম্ভাব্য স্থিতিশীলতা অনেকটাই নির্ভর করবে বাণিজ্য-চুক্তির অগ্রগতি, আন্তর্জাতিক ঝুঁকি-মনোভাব এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপের ওপর।
