আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজস্থান হাইকোর্ট এক গুরুত্বপূর্ণ রায়ে জানিয়েছে, দু’জন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি নিজেদের সম্মতিতে লাইভ-ইন সম্পর্কে থাকলে তা বেআইনি নয়—এমনকি তারা আইনত বিবাহের ন্যূনতম বয়সে না পৌঁছালেও। শুক্রবার পিটিআই এই তথ্য জানিয়েছে।

ভারতে বর্তমানে নারী-পুরুষের আইনি বিবাহের বয়স ভিন্ন—নারীর ক্ষেত্রে ১৮ বছর এবং পুরুষের ক্ষেত্রে ২১ বছর। এই পটভূমিতেই ১৮ বছর বয়সী এক তরুণী এবং ১৯ বছর বয়সী এক তরুণের আর্জি নিয়ে শুনানি করেন বিচারপতি অনুপ কুমার ধান্ড।

পিটিশনে তারা আদালতের কাছে সুরক্ষার আবেদন জানান। অভিযোগে বলা হয়, তরুণীর পরিবার তাদের সম্পর্কের বিরোধিতা করছে এবং হত্যার হুমকি দিয়েছে। আরও জানা যায়, গত ১৩ নভেম্বর এবং ১৭ নভেম্বর কোটার পুলিশে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

শুনানিতে সরকারি কৌঁসুলি বিবেক চৌধুরী যুক্তি দেন, যেহেতু তরুণটি এখনও ২১ বছরের নিচে, তাই তাকে লাইভ-ইন সম্পর্ক করতে দেওয়া উচিত নয়। কিন্তু আদালত এই যুক্তি খারিজ করে দেয়।

রায়ে বিচারপতি ধান্ড উল্লেখ করেন, ভারতীয় সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জীবনের অধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতা মৌলিক অধিকার, এবং তা কেবলমাত্র বিবাহযোগ্য বয়সের যুক্তিতে খর্ব করা যায় না। তিনি আরও বলেন, লাইভ-ইন সম্পর্ককে ভারতীয় আইনে কোথাও নিষিদ্ধ বা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়নি।

বিচারপতি ধান্ড তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন—“রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব প্রতিটি নাগরিকের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষা করা।” সেইসঙ্গে আদালত নির্দেশ দেয়, ভিলওয়ারা এবং যোধপুর (গ্রামীণ) জেলার পুলিশ সুপারদের পিটিশনে উল্লিখিত অভিযোগ যাচাই করতে এবং প্রয়োজন হলে তাদের যথাযথ নিরাপত্তা দিতে।

পিটিশনকারীরা আদালতকে জানান, তারা নিজেদের ইচ্ছায় বাসা ভাড়া নিয়ে একসঙ্গে থাকছেন এবং ২৭ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে একটি লিভ-ইন এগ্রিমেন্টও করেছেন। রায় ঘোষণার পর এই মামলা দেশের লাইভ-ইন সম্পর্ক সংক্রান্ত আইনি ও সামাজিক বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করল বলে মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।