আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাঞ্জাবের গুরদাসপুরে এক শিউরে ওঠা ঘটনা। সেন্ট্রাল জেলের রক্ষী পদে কর্মরত ছিলেন এক প্রাক্তন সেনাকর্মী। নাম গুরপ্রীত সিংহ। অভিযোগ, পারিবারিক অশান্তির জেরে নিজের সরকারি এ কে-৪৭ রাইফেল দিয়ে তিনি গুলি করে খুন করেন তাঁর স্ত্রী এবং শাশুড়িকে। বুধবার ভোররাতে এই নৃশংস ঘটনা ঘটানোর পর গুরপ্রীত নিজেও গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হন। ঘটনা জানাজানি হতে ব্যাপক চাঞ্চল্য।
পুলিশ জানিয়েছে, ভোর ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। গুরপ্রীত প্রথমে তাঁর স্ত্রী আকিভন্দর কউর এবং তার পর শাশুড়ি গুরজিৎ কউরকে গুলি করেন। স্ত্রী ও শাশুড়িকে খুনের পর অভিযুক্ত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গুরদাসপুরের ৭ নম্বর স্কিমের আবাসিক এলাকায় গা-ঢাকা দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু গুরপ্রীত আধিকারিকদের হুমকি দেন যে তিনি নিজেকে গুলি করবেন। পুলিশ প্রায় এক ঘণ্টা ধরে তাঁকে আত্মসমর্পণ করার জন্য বোঝানোর চেষ্টা করে। কিন্তু অভিযুক্ত আত্মসমর্পণ না করে নিজের রাইফেল দিয়েই গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হন। গুরদাসপুরের সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ (এসএসপি) আদিত্য সাংবাদিকদের বলেন, "গুরপ্রীত সিংহ গুরদাসপুর সেন্ট্রাল জেলে কাজ করতেন। ডিউটির জন্য তাঁকে সরকারি এ কে-৪৭ রাইফেল দেওয়া হয়েছিল। গত রাতে পারিবারিক বিবাদের কারণে গুরপ্রীত ওই রাইফেল ব্যবহার করে তাঁর স্ত্রী আকিভন্দর কউর এবং শাশুড়ি গুরজিৎ কউরকে খুন করেন। খুনের পর তিনি পালিয়ে ৭ নম্বর স্কিমের আবাসিক এলাকায় লুকিয়েছিলেন।"
তিনি আরও বলেন, "পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে এলাকাটি ঘিরে ফেলে। তাঁকে আত্মসমর্পণের জন্য অনুরোধ জানায়। তবে গুরপ্রীত তা শোনেননি, বরং নিজেই নিজেকে শেষ করেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।"
নিহত আকিভন্দর কউরের বোন পরমিন্দর কউর জানান, ২০১৬ সালে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। প্রথম থেকেই দু'জনের মধ্যে প্রায়ই ঝামেলা হতো। পরমিন্দরের অভিযোগ, গুরপ্রীত তাঁর বোনকে মানসিক নির্যাতন করতেন। এমনকী কখনও কখনও খুনের হুমকিও দিতেন।
তিনি বলেন, "ও (গুরপ্রীত) মানসিক বিকারগ্রস্তের মতো। আমার বোনকে খুব কষ্ট দিত। আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগও জানিয়েছিলাম।"
পরমিন্দর জানান, ২০২০ সালে তাঁর ভাইয়ের মৃত্যুর পর তাঁর মা আকিভন্দরকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। মায়ের কাছে চলে আসার পরও গুরপ্রীত লাগাতার ফোন করে আকিভন্দরকে হেনস্থা করতেন ও প্রাণে মারার হুমকি দিতেন। "ও ফোন করে বলত, মেরে ফেলব। কিন্তু আমার বোন বলত, 'আমি তো বাড়িতে আছি, ও কী করে মারবে?' আমরা বুঝতেই পারিনি যে ও এমন মারাত্মক কাণ্ড ঘটিয়ে দেবে," বলেন পরমিন্দর। হামলার বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও জানান, "রাত ৩টের সময় ও এসে আমার বোনকে ডাকে। দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই আমার বোনকে দু'বার গুলি করে শেষ করে। আমার মাকেও ও গুলি করে মেরেছে।"
