আজকাল ওয়েবডেস্ক: জম্মু ও কাশ্মীরের লিদওয়াস এলাকায় ‘অপারেশন মহাদেব’ নামে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে তিন জঙ্গিকে নিকেশ করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং সিআরপিএফ। জানা যাচ্ছে, নিহতদের মধ্যে রয়েছে পহেলগাঁও হামলার মূলচক্রী এবং শীর্ষ লস্কর-ই-তইবা কমান্ডার হাশিম মুসা। সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুর ১২:৩৭ মিনিটে লিদওয়াস এলাকার জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে চিনার কর্পস। এক ঘণ্টার মধ্যেই ড্রোন ফুটেজে তিনটি মৃতদেহ দেখা যায়, যা নিশ্চিত করে যে তিন জঙ্গি নিকেশ হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চলছিল গত দু’দিন ধরে। ডাচিগাম অরণ্য এলাকার গভীর থেকে একটি সন্দেহজনক রেডিও বার্তা ধরা পড়ে, যা পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে তদন্ত শুরু হয়।

গোপন সূত্রে জানা যায়, এই জঙ্গিরা লস্কর-ই-তইবা ও জইশ-ই-মহম্মদের যৌথ মডিউলের অংশ, যারা গত ১৪ দিন ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর নজরে ছিল। এই মডিউলে মোট ৫ থেকে ৭ জন জঙ্গি ছিল বলে অনুমান। সোমবার সকালে এই মডিউলের তিনজন সদস্যকে পৃথকভাবে শনাক্ত করে সেনা। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ, ২৪ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস ও ৪ প্যারা ইউনিটের যৌথ বাহিনী ওই তিন জঙ্গিকে ঘিরে ফেলে এবং আচমকা আক্রমণের মাধ্যমে তাদের নিকেশ করে। জানা গেছে, জঙ্গিরা একটি গাছের নিচে পাতার ঘন গাছপালার মধ্যে একটি অস্থায়ী গর্তে লুকিয়ে ছিল। এর আগে ১১ জুলাই, বৈসরান এলাকায় একটি চীনা স্যাটেলাইট ফোন সক্রিয় অবস্থায় ধরা পড়ে, যা গোয়েন্দা সংস্থাগুলির নজর কাড়ে।

এরপরই সেনা, পুলিশ ও সিআরপিএফ যৌথভাবে পুরো এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করে। সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, এই তিন জঙ্গি পহেলগাঁও হামলার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে সরাসরি যুক্ত ছিল। তবে সাময়িক ভাবে অভিযান শেষ হলেও গোটা এলাকায় এখনও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কারণ পুরো মডিউল এখনও ধরা পড়েনি। ২২ এপ্রিল। পহেলগাঁও হামলা। ভূস্বর্গ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল সেদিন। নৃশংস জঙ্গি হামলায় রক্তাক্ত হয়েছিল উপত্যকা। প্রাণ গিয়েছিল ২৬ জন সাধারণ মানুষের। ৭ মে পহেলগাঁও হামলার প্রত্যাঘাত হানে ভারত। অপারেশন সিঁদুর। ১৯৭১-এর পর প্রথমবার একযোগে তিন সেনা বাহিনীর হামলা পাকিস্তানের উপর। অপারেশন সিঁদুরের পরেই, জানানো হয়, বুধবার, রাত ১টা ৪৪ নাগাদ হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। হামলা চালানোর পর সেনাবাহিনী বিবৃতিতে স্পষ্ট জানায়, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জঙ্গিঘাঁটিগুলিতে আক্রমণ চালানো হয়েছে, যেখানে ভারতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

অপারেশন সিঁদুর সফল হলেও, পহেলগাঁওয়ের হামলাকারীরা কোথায়? সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে বারে বারে। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, উত্তর মিলল সোমবারে, ২৮ জুলাই। সূত্রের খবর, সুলেমান, লস্কর-ই-তৈয়বার একজন সন্ত্রাসী, যে পহেলগাঁও হামলার মূল চক্রী বলে চিহ্নিত, সে এক সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিল এবং হাশিম মুসা নামে পরিচিত ছিল। সূত্রের খবর, সোমবারের অপারেশন সিঁদুরে নিহত হয়েছে সে। জানা গিয়েছে, আবু হামজা এবং ইয়াসির নামেও দু' জনের প্রাণ গিয়েছে ওপি মহাদেব-এ। অপারেশন সিঁদুরের পর, অপারেশন মহাদেব। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ভারতীয় সেনা এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ যৌথভাবে এই অপারেশন শুরু করে সোমবার। ভারতীয় সেনার চিনার কর্পস তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে অপারেশন মহাদেব সম্পর্কে তথ্যও দিয়েছে।